শনিবার, ৮ ডিসেম্বর, ২০১২

ভ্রমণে ত্বকের যত্ন

সবাই মিলে কোথাও ঘুরতে বের হয়েছেন। স্মৃতি ধরে রাখতে ক্যামেরাবন্দী করার পালা সুন্দর সময়কে। হঠাৎ নিজের কাছে মনে হলো, ত্বকে মলিনতা, রুক্ষতা বাসা বেঁধেছে। মনটা খারাপ হয়ে গেল। কোথায় ভেবেছিলেন নিজেকে সবার মাঝে অনন্য করে তুলবেন। সামান্য অবহেলা-অযত্নে হিতে বিপরীত ঘটল। এ ধরনের পরিস্থিতিতে না পড়তে চাইলে ভ্রমণের সময়ও ত্বকের যত্ন নিতে হবে। সব সময় যে ধরনের রূপচর্চা করেন, সেসব বেড়ানোর দিনগুলোয় বিরক্তির কারণ হতে পারে। ফলে চটজলদি ত্বকচর্চা তো করতেই পারেন।
 

সঙ্গে যা রাখবেন
এক রাতের জন্যই হোক কিংবা পাঁচ দিনের জন্যই হোক, আপনার হাতব্যাগে কিছু প্রসাধনসামগ্রী নিয়ে নেবেন। এই যেমন চিরুনি, পাঞ্চ ক্লিপ, রাবার ব্যান্ড, সানস্ক্রিন লোশন, কাজল, লিপস্টিক, ব্লাশন, কমপ্যাক্ট পাউডার, লিপলাইনার, মাশকারা ও ছোট আয়না। কেউ যদি আইশ্যাডো ব্যবহার করতে চান, তাহলে সোনালি, বাদামি ও কালো রং থাকবে, এমন আইশ্যাডো বাক্স বেছে নিতে পারেন। এ ছাড়া ত্বক পরিষ্কারের জন্য ফেসওয়াশ, টোনার ও ফেসিয়াল ওয়াইপস সঙ্গে নিতে হবে। রাতে ঘুমানোর আগে ময়েশ্চারাইজার লোশন ব্যবহার করতে হবে। ছোট ছাতা ও সানগ্লাস সঙ্গে নিতে ভুলবেন না।

ত্বকের যত্নে
ঘুরতে গিয়ে সকালে বের হয়ে সন্ধ্যায় হোটেল বা রিসোর্টে ফিরে ফ্রেশ লুক দিতে চাইলে চটজলদি ত্বক পরিষ্কার করে নিতে পারেন। হাতের কাছে পাকা কলা থাকলে হাত দিয়ে পেস্টের মতো করে মুখে লাগিয়ে ১০ থেকে ১৫ মিনিট রেখে দেবেন। সব ধরনের ত্বকে পাকা কলা ব্যবহার করতে পারেন। তবে তৈলাক্ত ত্বক হলে অল্প সময় মুখে রেখে ধুয়ে ফেলতে হবে। এটি ব্যবহারে ত্বকে উজ্জ্বলতা বাড়বে। সতেজ দেখাবে ত্বক। পাকা পেঁপে, টমেটোও এভাবে ব্যবহার করা যেতে পারে। ত্বক পরিষ্কার করতে পাউরুটি দুধে ভিজিয়ে মুখে ব্যবহার করতে পারেন। এতে ত্বক নরম হবে।
বেড়াতে যাওয়ার আগে ছোট কাচের বোতলে করে চালের গুঁড়া, শুকনা হলুদের গুঁড়া ও বেসন নিয়ে যাবেন। চাইলে ত্বকের উপযোগী উপটানও নিয়ে নিতে পারেন। আর প্রতিরাতে ঘুমানোর আগে ফেসওয়াশ দিয়ে মুখ ধুয়ে টোনার ব্যবহার করে ময়েশ্চারাইজিং ক্রিম লাগিয়ে নেবেন।

বৃহস্পতিবার, ১৯ জুলাই, ২০১২

ডাবের পানিতে সৌন্দর্যচর্চা

সৌন্দর্য বিকশিত হয় দুভাবে—বাহ্যিক আর অভ্যন্তরীণ। বাইরে থেকে পুরো শরীরের যতই যত্ন নিন না কেন দেহের ভেতরের সব অঙ্গপ্রত্যঙ্গ সঠিকভাবে কাজ না করলে ত্বকে দেখা দেবে নানা সমস্যা। তাই সৌন্দর্যচর্চা তো করবেনই, পুষ্টিকর সব উপাদানও খাবার তালিকায় রাখতে হবে। আর প্রাকৃতিকভাবে যত বেশি সৌন্দর্যচর্চা করা যায়, ততই ভালো। কারণ, প্রাকৃতিক জিনিসগুলোর ক্ষতিকর পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া বলতে গেলে খুবই কম। সৌন্দর্যচর্চার এমনই একটি প্রাকৃতিক উপাদান হলো ডাবের পানি।

ডাবে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন ‘সি’ ও ‘এ’। এই ভিটামিন দুটো ত্বক ও চুল মজবুত করে। নখকে ভঙ্গুরতা থেকে রক্ষা করে। নখে আনে ঔজ্জ্বল্য। চোখের নিচে দাগ পড়া ও চোখের মাংসপেশির দুর্বলতা দূর করে ভিটামিন ‘এ’। অনেকেরই চোখের পাপড়িতে অ্যালার্জি থাকে। ফলে মাসকারা, আইলাইনার ব্যবহার করতে পারেন না। পাপড়িতে সাদা সাদা জমাটবাঁধা ছোট দানা বা আঠালো ভাব থাকে। ভিটামিন ‘এ’ এসব সমস্যা দূর করে। যাঁরা নিয়মিত ডাবের পানি দিয়ে মুখ ধুয়ে ফেলেন, তাঁদের এই সমস্যাগুলো হয় তুলনামূলকভাবে কম। কারণ, ডাবের পানির
বিশেষ উপাদান ত্বকের জন্য ক্ষতিকর ব্যাকটেরিয়া, ভাইরাস, ছত্রাককে ধ্বংস করতে সাহায্য করে।
ডাবের পানি দিয়ে মুখ ধোয়ার সময় চোখ বন্ধ করে মুখ ধুতে হবে, চোখ খোলা রাখা যাবে না। আর ডাবের পানিতে মুখ ধোয়ার পর মুখে হালকা আঠালো ভাব লাগে। এ জন্য মুখে ডাবের পানি দেওয়ার পাঁচ থেকে ১০ মিনিট পর স্বাভাবিক পানিতে মুখ ধুয়ে ফেলুন। যাঁদের ত্বক খুব তৈলাক্ত, তাঁরা শুধু ডাবের পানিতে মুখ ধুলে হবে না, ভালো ফেসওয়াশ দিয়ে মুখ ধুয়ে তারপর ডাবের পানি দেবেন। কারণ, তৈলাক্ত ত্বকের লোমকূপগুলোতে ময়লা জমে বেশি।
অতিরিক্ত গরম, রোদের তাপ, কর্মব্যস্ততা, মানসিক চাপের নেতিবাচক প্রভাব পড়ে ত্বক ও চুলের ওপর। চেহারায় ফুটে ওঠে বয়সের ছাপ। এ অবস্থায় ডাবের পানি আপনাকে দেবে সতেজতা। কারণ, এতে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে সোডিয়াম, ক্লোরাইড ও পটাশিয়াম, যা শরীরের পানিশূন্যতা দূর করে ক্লান্তি মুছে চেহারায় আনে উজ্জ্বল-ভাব। পুরো শরীরে সঠিকভাবে রক্ত চলাচলের জন্য ত্বক ও চুলে দেখা যায় এর ইতিবাচক প্রভাব। এতে চুল ভঙ্গুরতা থেকে রক্ষা পায়, চুলের গোড়া হয় মজবুত।
ডাবের পানিতে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন বি কমপ্লেক্স। এই ভিটামিন মানুষের স্নায়ুতন্ত্রকে রাখে শক্তিশালী। স্নায়ু বা নার্ভ কর্মতৎপর হলে ত্বক, চুল ও দাঁতের মাড়ি সুস্থ থাকে। মানুষের মাথায় রয়েছে প্রচুর পরিমাণে শিরা, উপশিরা ও স্নায়ু। শিরা-উপশিরা দিয়ে সঠিকভাবে রক্ত চললে আর স্নায়ু সতেজ থাকলে প্রতিটি চুলের গোড়া হবে মজবুত।
চুল নিয়মিত পরিষ্কার রেখে চুলের ধরন বুঝে যত্ন নিতে হবে। দেহে ভিটামিন বি কমপ্লেক্স ও সোডিয়াম ক্লোরাইডের ঘাটতি দেখা দিলে অনেকেরই ঠোঁটের চামড়া উঠে যায়। গ্রীষ্মেও শীতকালের মতো ঠোঁটের চামড়া ফেটে যায়। ঠোঁটে আসে ফ্যাকাশে সাদা ভাব। লিপজেল, লিপগ্লস বা লিপস্টিক দিলেও ঠোঁটের সাদা চামড়া উঠে আসে। কখনো বা লিপজেলের ওপর দিয়ে ফুটে ওঠে ঠোঁটের মৃত চামড়া।
এই অবস্থা থেকে পরিত্রাণের জন্য প্রচুর পরিমাণে ডাবের পানি পান করতে হবে। সপ্তাহে অন্তত দুই প্যাকেট খাওয়ার স্যালাইন খেতে হবে। আর ঠোঁটের চামড়া হাত বা নখ দিয়ে টেনে ছিঁড়বেন না। উচ্চ রক্তচাপের রোগীরা প্রেশার না মেপে ওরস্যালাইন খাবেন না। কারণ, খাওয়ার স্যালাইন দ্রুত রক্তচাপ বাড়ায়।
আয়রনও রয়েছে ডাবের পানিতে যথেষ্ট পরিমাণে। রক্ত তৈরি করার জন্য আয়রন হলো গুরুত্বপূর্ণ উপাদান। সারা শরীরে সঠিকভাবে রক্ত তৈরি হলে প্রতিটি অঙ্গ হবে বেশি শক্তিশালী, ফলে কর্মশক্তিও বাড়বে। দেহে আয়রনের পরিমাণ ঠিক থাকলে ত্বক হবে উজ্জ্বল ও মসৃণ।
ডাবের পানিতে খনিজ লবণ, ক্যালসিয়াম, ম্যাগনেশিয়াম ও ফসফরাসের উপস্থিতিও উচ্চমাত্রায়। এসব খনিজ লবণ দাঁতের ঔজ্জ্বল্য বাড়ায়। দাঁতের মাড়িকে করে মজবুত। অনেকের দাঁতের মাড়ি দিয়ে রক্ত পড়ে। মাড়ি কালচে লাল হয়ে যায়। হাসি বা কথা বলার সময় তা দেখা যায়। এ অবস্থা থেকে পরিত্রাণ দেবে খনিজ লবণ। পাশাপাশি হাড় মজবুত থাকলে হাঁটাচলাও হয় আত্মবিশ্বাসী ধরনের।
এই গরমে ছোট-বড় সবারই দেহের অভ্যন্তরীণ ও বাহ্যিক তাপমাত্রা বেড়ে যায়। এতে ত্বকে ফুটে ওঠে লালচে কালো ভাব। ডাবের পানি দেহের অভ্যন্তরীণ তাপমাত্রা কমিয়ে শরীরকে রাখে ঠান্ডা। তারুণ্য ধরে রাখতে এর অবদান অপরিহার্য। ডাবের পানি যেকোনো কোমল পানীয় থেকে অধিক পুষ্টিসমৃদ্ধ। কারণ, এটি সৌন্দর্যচর্চার প্রাকৃতিক মাধ্যম ও চর্বিবিহীন পানীয়। ডাবের পানি মিষ্টি হওয়া সত্ত্বেও ডায়াবেটিসের রোগীদের জন্য উপকারী। কারণ, এই পানি রক্ত পরিষ্কার রাখে। তবে কিডনির সমস্যায় ডাবের পানি খাওয়া থেকে বিরত থাকুন।
তবে সৌন্দর্যচর্চার জন্য শুধু ডাবের পানি পান করা বা এ পানি দিয়ে মুখ পরিষ্কার করলেই হবে না, চাই নিয়মিত পুষ্টিসমৃদ্ধ খাবার, নিয়ন্ত্রিত ওজন ও সুস্থ পরিবেশ। ভেজাল খাবারের ভিড়ে প্রাকৃতিক রূপচর্চার মাধ্যমগুলো আপনার সৌন্দর্যকে ধরে রাখবে বেশি দিন। তাই ডাবের পানিকে বলা হয় ‘ফ্লুইড অব লাইফ’ অর্থাৎ জীবনের পানীয়।

কাজলটানা চোখ

কাজল ও মাশকারা। শুধু এ দুইয়ের ব্যবহারেই চোখ সাজাতে পারেন মনের মতো করে। আরেকটু জমকালো ভাব আনতে চাইলে আইশ্যাডো তো আছেই। যুগের সঙ্গে তাল মিলিয়ে কাজল ব্যবহারেও এসেছে পরিবর্তন। এবারের নকশায় তেমন কিছু স্টাইলই তুলে ধরা হলো।

পুরোনো ধারার কাজল দেওয়ার সঙ্গে যোগ-বিয়োগ করেই নতুন অনেক স্টাইল দেখা যাচ্ছে ইদানীং। মোটা করে, ঘন করে, ইচ্ছামতো টানা টানা করে কাজল দেওয়ার ট্রেন্ড দেখা যাচ্ছে এখন। চোখের ওপরের অংশে অনেকেই টেনে লাগাতে চান না। এ ক্ষেত্রে কাজলের শেষ প্রান্তে একটু ব্লেন্ড করে দেওয়া যায়। অথবা শেষ প্রান্তটা অনেক চওড়া করে আঁকা যেতে পারে। দেখতে ভালো লাগবে। রূপবিশেষজ্ঞ ফারজানা আরমান জানান, কাজল, মাশকারা ও লাইনার চোখের সাজে খুবই গুরুত্বপূর্ণ। সুন্দর করে কাজল আর আইশ্যাডো দিলে আইশ্যাডোর দরকার হয় না। তবে পরিবেশ, পোশাক, বয়স অনুযায়ী কাজলের ব্যবহার সঠিক হতে হবে। না হলে পুরো সাজটাই বেখাপ্পা লাগবে।
কাজল দিলে চোখ দুটো দেখতে বড় লাগে। এ জন্য বড় চোখের অধিকারীরা চোখের নিচের অংশে কাজল না দিলেই ভালো। চোখের পাপড়ির কাছ দিয়ে সুন্দর করে আইলাইনার দিয়ে, মাশকারা লাগালেই হয়ে যাবে। আর ছোট চোখের জন্য নিচের দিকে কাজল লাগিয়ে ঘন করে মাশকারা লাগাতে হবে। চোখের ওপরের অংশে আইলাইনার দেওয়ার প্রয়োজন নেই।

চোখের যত্ন
কাজল ও মাশকারা হতে হবে ভালো ব্র্যান্ডের। চোখ বলে কথা। ঘুমানোর আগে অবশ্যই আই মেকআপ তুলে ফেলতে হবে। কাজল বেশিক্ষণ রাখার ফলে চোখের নিচে কালো দাগ পড়ে যায়। কারণ, এতে রাসায়নিক পদার্থ থাকে। অ্যালকোহল নেই এমন আই মেকআপ রিমুভার তুলায় লাগিয়ে চোখ পরিষ্কার করতে হবে।
ফারজানা আরমান জানান, দেশীয় পোশাকের সঙ্গে মোটা এবং ঘন করে কাজল, আইলাইনার দিলে দেখতে ভালো লাগে। কিন্তু পাশ্চাত্য পোশাকের সঙ্গে টেনে কাজল কিংবা আইলাইনার না লাগানোই ভালো। মাশকারা ঘন করে দিলেই ভালো দেখাবে। তবে কেউ যদি একান্তই দিতে চান, সে ক্ষেত্রে আইল্যাশ বরাবর কাজল দিতে পারেন। এরপর ব্রাশ দিয়ে ব্লেন্ড করে দিতে হবে। তাহলে পাপড়ির নিচে বেশ নাটকীয়ভাব চলে আসবে।

মনে রাখুন
 মাশকারা কেনার সময় বুঝে কিনতে হবে। কারও দরকার ভলিউম বেশি তৈরি করবে এমন মাশকারা। কারও আবার পাপড়িগুলো লম্বায় ছোট হয়ে থাকে। সেটার জন্যও পাওয়া যায় আলাদা মাশকারা।
 দিনের বেলায় আইলাইনার না দিলেই ভালো দেখাবে। এ সময় শুধু কাজল আর মাশকারাই যথেষ্ট। তবে যদি দিতেই চান, তাহলে জেল আইলাইনার দিতে পারেন। এটা একটা ম্যাট লুক দেবে। চকচকে ভাবটা আইজেলে আসবে না। রাতের বেলায় আইলাইনার দেওয়া যাবে।
 দিনের বেলায় পানিনিরোধক কাজল ও মাশকারা ব্যবহার করুন।
 দিনের বেলায় খুব মোটা করে কাজল না লাগানোই ভালো।’

সুস্থ থাকুন বর্ষায়

বর্ষার নবধারা জল যেমন আবর্জনা ধুয়ে দেয়, তেমনি বর্ষা অনেক রোগও বয়ে আনে। কেমন করে বর্ষা রোগ আনে? বর্ষার জল যখন জলাবদ্ধতা সৃষ্টি করে, তখন খুব সহজেই সেই পানি দূষিত হয়ে যায়। আর সেই পানির সংস্পর্শে এলে রোগবালাইও হতে পারে। তারপর আবার ভেজা আবহাওয়ায় ঘর থাকে স্যাঁতসেঁতে। এমন পরিবেশ তো রোগ-জীবাণুর জন্য খুব অনুকূল। তাই তো বাদল দিনগুলো উপভোগের পাশাপাশি সচেতনও হতে হবে। এই বর্ষার জলে যে রোগগুলো বেশি হয় তার মধ্যে ডায়রিয়া, কলেরা, টাইফয়েড, জন্ডিস উল্লেখযোগ্য। এ ছাড়া কৃমির সংক্রমণও ঘটে প্রচুর। রোগগুলো কেমন করে ছড়ায়, একটু সংক্ষেপে জেনে নিন এবার।
ডায়রিয়া
এ সময় ডায়রিয়ার প্রধান কারণ হলো দূষিত পানি পান। বর্ষার জলের সঙ্গে মিশে জীবাণুগুলো ছড়িয়ে পড়ে দ্রুত। শিশুরাই বেশি আক্রান্ত হয়।
কারণ, তাদের রোগ প্রতিরোধের ক্ষমতা বড়দের তুলনায় কম। তাই ছোট-বড় সবারই পানি পানে সতর্ক হতে হবে।
কলেরা
কলেরা হয় রোটা ভাইরাসের সংক্রমণে।
কলেরায় আক্রান্ত রোগীর দেহ থেকে পানি ও লবণ বেরিয়ে যায় খুব তাড়াতাড়ি। রোগী দুর্বল হয়ে পড়ে। দ্রুত চিকিৎসা করা না গেলে রোগী কিন্তু মারাও
যেতে পারে।
টাইফয়েড
বর্ষাকালেই টাইফয়েড জ্বরের প্রকোপ বেশি থাকে। সালমোনেলা টাইফি নামের জীবাণু দ্বারা পানি ও খাবার দূষিত হয় এ সময়। সেই পানি কিংবা খাবার খেলে মানুষ টাইফয়েড জ্বরে আক্রান্ত হয়।
আক্রান্ত ব্যক্তি থেকে আবার জীবাণু ছড়িয়ে পড়ে অন্যের দেহে।
হেপাটাইটিস
হেপাটাইটিস একধরনের যকৃতের রোগ। হেপাটাইটিসের বেশ কিছু প্রকারভেদ আছে। তার মধ্যে হেপাটাইটিস-এ ও হেপাটাইটিস-ই বর্ষাকালে বেশি হয়। কারণ, এ দুটি পানিবাহিত ভাইরাস। দূষিত পানির মাধ্যমে রোগটি মানুষের দেহে ছড়ায়।
কৃমি সংক্রমণ
বর্ষাকালে কৃমি সংক্রমণের প্রাদুর্ভাব বেশি হয়ে থাকে। বর্ষার জল আর কাদামাটিতে মিশে থাকে এই জীবাণু। তাই খুব সহজেই কৃমির সংক্রমণ ঘটে এ সময়ে।
কেমন করে বর্ষার এই রোগগুলো প্রতিরোধ করা যায়—জানতে চাইলে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের মেডিসিন অনুষদের ডিন এ বি এম আবদুল্লাহ বলেন, ‘সচেতনতা বৃদ্ধির মাধ্যমে বর্ষার রোগগুলো প্রতিরোধ সম্ভব। তার পরও যদি রোগ এড়ানো না যায়, চিকিৎসকের শরণাপন্ন তো হতেই হবে। তার পরও বলব, এ সময় সতর্ক থাকাটা খুব জরুরি।’

প্রতিরোধে করণীয়
 সব সময় খাওয়ার আগে ভালো করে সাবান দিয়ে হাত ধুয়ে নিতে হবে। শিশুদের দিকে বাড়তি নজর দিতে হবে এ সময়ে।
 স্নান কিংবা আহার, এমনকি গৃহস্থালি জিনিসপত্র ধোয়ার ক্ষেত্রেও বিশুদ্ধ পানি ব্যবহার করুন।
 বাইরে বেরে হওয়ার সময় সঙ্গে করে বিশুদ্ধ পানি নিয়ে যাওয়াই ভালো। একান্তই বাইরের পানি পান করতে হলে তা বিশুদ্ধ কি না, ভালো করে জেনে নিন।
 বাড়িতে পানি ফুটিয়ে পান করার অভ্যাস করুন। একান্তই ফোটানো সম্ভব না হলে পানি বিশুদ্ধকরণ ট্যাবলেট কিংবা ফিটকিরি ব্যবহার করুন।
 তাজা শাকসবজি খেতে হবে। রান্না করার আগে ভালো করে ধুয়ে নিতে হবে শাকসবজিগুলো। পচা-বাসি খবার একদমই খাওয়া যাবে না।
সাধারণত এ নিয়মগুলো মেনে চললে বর্ষার রোগবালাই কিন্তু প্রতিরোধ সম্ভব। তার পরও যদি কেউ আক্রান্ত হয়ে থাকে, একদমই সময় নষ্ট না করে চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হবে। একটুখানি সচেতনতা আর চিকিৎসকের পরামর্শ পরিবারের প্রিয় মানুষটিকে অনেক বিড়ম্বনা থেকে বাঁচিয়ে দেবে।

বর্ষার মেকআপ

ক্ষণে ক্ষণে রূপ বদলাচ্ছে প্রকৃতি। এই রোদ এই বৃষ্টি। সাজসজ্জার জন্য দুটোতেই বিপত্তি। গরমের ঘামে বা বৃষ্টির ছাটে মুখের প্রসাধন নষ্ট হয়ে যেতে পারে। সে কারণে এ সময়ের মেকআপের সব সামগ্রীই হতে হবে পানিরোধক। এর কোনো বিকল্প নেই।

 ‘এ ধরনের আবহাওয়ায় খুব যত্নের সঙ্গে মেকআপ করতে হবে। মুখের বেইস করার সময় খেয়াল রাখতে হবে ত্বকের ধরন। জমকালো কোনো অনুষ্ঠানের জন্য সাজতে চাইলে ফাউন্ডেশন ব্যবহার করা যেতে পারে। সে ক্ষেত্রে পাউডার ফাউন্ডেশন বা মিনারেল ফাউন্ডেশন ব্যবহার করা ঠিক নয়। শুরুতে ত্বকের রঙের সঙ্গে মিলিয়ে প্যানস্টিক মুখে ও গলায় লাগিয়ে নিন। এরপর ভালোভাবে মিশিয়ে নিতে হবে ত্বকের সঙ্গে। দীর্ঘস্থায়ী মেকআপের জন্য এর ওপরে ডাস্ট পাউডার দিয়ে নিতে হবে। এটি বাজারে কিনতে পাওয়া যায়। এই পাউডার ব্যবহারের পর ব্রাশ দিয়ে বাড়তি পাউডার ঝেড়ে ফেলতে হবে। এবার শেষ পর্যায়ে প্যানকেক ব্যবহার করলে বৃষ্টিতে বা ঘামে মেকআপ নষ্ট হবে না। এ ছাড়া কেউ যদি ত্বক চকচকে দেখাতে চায় তাহলে তরল ফাউন্ডেশন ব্যবহার করতে পারেন। এতে বৃষ্টির পানি মুখে লেগে থাকবে না। বৃষ্টিতে ভিজলেও টিস্যু দিয়ে একটু চাপ দিয়ে নিলেই পানি সরে যাবে।’


কাজল, মাশকারা ও আইলাইনার অবশ্যই পানিরোধক হতে হবে। এ সময়ের জন্য জেল কাজল বেশি ভালো। চোখের নিচের অংশে কাজল আর ওপরের অংশে আইলাইনার ভালো দেখাবে। আইশ্যাডোর ব্যবহারের আগে মনে রাখতে হবে সেটি যেন ক্রিম আইশ্যাডো হয়। পাউডার বা তরল আইশ্যাডো ব্যবহার করা উচিত নয়। তাতে বৃষ্টিতে ভিজে সমস্ত সাজই নষ্ট হয়ে যাওয়ার ভয় থাকে।
বর্ষার সময় পাউডার ব্লাশন ব্যবহার করা যেতে পারে। তবে গোলাপি, বাদামি বা পিচের মতো হালকা রংগুলো মানানসই এ সময়ের সাজে।
এবার তো ঠোঁটকেও রাঙাতে হবে। এ জন্য ম্যাট লিপস্টিকই একমাত্র ভরসা। গ্লস লিপস্টিক বা লিপগ্লস ব্যবহার করবেন না। দিনে হালকা রঙের লিপস্টিকই ভালো। রাতের জন্য গাঢ় উজ্জ্বল রঙের লিপস্টিক দিয়ে ঠোঁট রাঙাতে পারেন।
আসল কথা হলো, একটু বাড়তি যত্ন ও সর্তকতা নিয়ে এ সময়ের মেকআপ করতে হবে। পানিরোধক প্রসাধনসামগ্রী ব্যবহার করলে ঘুমানোর আগে খুব ভালোভাবে তুলে ফেলতে হবে।

শুক্রবার, ১৫ জুন, ২০১২

ঝলমলে চুল পেতে

ঝলমলে সুন্দর চুল কে না চায়। চুলটা একটু রেশমি হোক, নরম হোক, তবেই না সাজের সঙ্গে মিলিয়ে খেলা করা যাবে চুলের সঙ্গে। রেশমের মতো নরম ও চকচকে স্বাস্থ্যোজ্জ্বল চুল পেতে দেখে নিন  কিছু পরামর্শ।
 


চুল মূলত চার ধরনের হয়। ধরন বুঝে কিছু প্রাকৃতিক যত্ন নিলে ঘরে বসেই পেতে পারেন রেশমি ও ঝলমলে চুল।

তৈলাক্ত চুল
তৈলাক্ত চুল সারাক্ষণই চটচটে হয়ে থাকে। ভেজা ভাব থাকে, ফলে খুব দ্রুত খুশকি ও ময়লা জমে। এ চুল সপ্তাহে অন্তত তিন দিন খুব ভালো শ্যাম্পু দিয়ে ঠান্ডা পানিতে ধুতে হবে। খুব বেশি ম্যাসাজ বা তেল দেওয়া যাবে না। অনেকক্ষণ চিরুনি দিয়ে আঁচড়াবেন না। এতে আরও বেশি তেল নিঃসৃত হবে। শ্যাম্পু শেষে সাধারণ কন্ডিশনার ব্যবহার করতে পারেন। তারপর এক মগ পানিতে চার টেবিল চামচ লেবুর রস মিলিয়ে ধুয়ে ফেলবেন।

মিশ্র চুল
অনেকের চুল মিশ্র প্রকৃতির হয়। এই চুলের গোড়া চটচটে থাকে, কিন্তু উপরিভাগ রুক্ষ প্রকৃতির হয়। মিশ্র চুলে সপ্তাহে অন্তত তিন দিন শ্যাম্পু ও কন্ডিশনার ব্যবহার করতে হবে। শ্যাম্পুর আগে কুসুম গরম তেলে লেবুর রস মিশিয়ে হালকা ম্যাসাজ করে নেবেন। পানিতে গ্লিসারিন মিশিয়েও ম্যাসাজ করতে পারেন।


রুক্ষ চুল
আজকাল রুক্ষ চুলও খুব বেশি দেখা যায়। ধুলাবালি, রোদের ক্ষতিকর প্রভাবে চুল রুক্ষ হতে পারে। রুক্ষ চুলে কোনো চকচকে ভাব থাকে না, চুলের আগা ফাটা হয়। এই চুল অন্তত তিন দিন খুব ভালো ম্যাসাজ করতে হবে তেল দিয়ে। ময়েশ্চারসমৃদ্ধ শ্যাম্পু ব্যবহার করতে হবে ও ডিপ কন্ডিশনিং করা চাই। শ্যাম্পুর আগে তেলের বদলে ঘৃতকুমারীর (অ্যালোভেরা) শাঁস বা দুধ ও মধুর মিশ্রণ দিয়েও ম্যাসাজ করা যায়। শ্যাম্পু শেষে এক মগ পানিতে দুই টেবিল চামচ লেবুর রস ও চার টেবিল চামচ মধু মিলিয়ে চুল ধুতে পারেন।

স্বাভাবিক চুল
যাঁদের চুল স্বাভাবিক, তাঁদের চুল নিয়ে খুব কমই ভাবতে হয়। তাঁদের চুল স্বাভাবিকভাবেই রেশমি হয়। তাঁরা সপ্তাহে এক দিন শ্যাম্পু করলেও চলে। মাঝেমধ্যে রিঠা, শিকাকাই ও আমলকী ভেজানো পানি চুলে ম্যাসাজ করতে পারেন।
সবশেষে রাহিমা সুলতান বললেন, যেকোনো ধরনের চুল সপ্তাহে এক দিন চা-পাতার লিকার দিয়ে ধুলে চুল রেশমি থাকে। ডিমের কুসুমের সঙ্গে গোলাপজল মিলিয়ে চুলে ম্যাসাজ করলেও চুলের কন্ডিশনারের কাজ হয়। মেথির দানা পানিতে ভিজিয়ে চুলে ম্যাসাজ করে কুসুম গরম পানিতে ধুলেও চুলের স্বাস্থ্য ভালো থাকবে ও সিল্কি হয়ে উঠবে।

সোমবার, ২৮ মে, ২০১২

রংচঙে রোদচশমা

চোখের সুস্থতা ধরে রাখতে এই গরমে চাই সানগ্লাস বা রোদচশমা। আর সেটা হালফ্যাশনের হলে তো দারুণ। সানগ্লাস দিয়েই ফুটিয়ে তোলা যায় নিজের রুচি। কীভাবে-

প্রতিদিনই সূর্যের আলোর তাপ আর অতিবেগুনি রশ্মি বাড়ছে। তাই বলে তো থেমে থাকবে না প্রতিদিনের কর্মব্যস্ত জীবন। এটাও ভুলে গেলে চলবে না, সরাসরি চোখে রোদ লাগা খারাপ। চোখে রোদ পড়লে সারাক্ষণই আমরা চোখ সংকুচিত করে তাকাই। ফলে চোখের চারপাশের নরম চামড়ায় দ্রুত ভাঁজ পড়ে, কালো দাগ হয়।
যাঁদের ত্বক স্পর্শকাতর, তাঁদের খুব সহজেই মুখের চামড়া পুড়ে যায়। রোদচশমা শুধু চোখ নয়, মুখকেও রক্ষা করে সূর্যের ক্ষতিকর রশ্মি, ধুলো ও অ্যালার্জি থেকে। রোদচশমার সঠিক রং ও আকার নির্বাচন করতে পারলেই নিজেকে সবার মধ্যে আলাদা করে ফুটিয়ে তোলা যায়। রোদচশমা হলো সেই ফ্যাশন অনুষঙ্গ, যা আপনার অতি সাধারণ পোশাকটিকেও ফ্যাশনেবল হিসেবে ফুটিয়ে তুলতে পারে।
আফরোজা কামাল আরও বলেন, রোদচশমার রং ও আকৃতি নির্বাচন করতে পারাটা খুব গুরুত্বপূর্ণ। রোদচশমা একটু বড় হওয়াই ভালো। যাঁদের মুখ একটু বড়, তাঁরা অবশ্যই বড় রোদচশমা ব্যবহার করবেন, এতে মুখ ছোট দেখাবে। যাঁদের মুখ ছোট, তাঁরা চিকন আকৃতি বেছে নেবেন।
যাঁদের ত্বকের রং গাঢ় তাঁরা কালো, কফি, গাঢ় বাদামি রঙের চশমা পরলে ভালো দেখায়। যাঁদের গায়ের রং উজ্জ্বল তাঁরা বেগুনি, সাদা, গোলাপি, লাল রং পরলে ভালো দেখায়। সানগ্লাসে নিজেকে ভালো দেখাতে চাইলে খেয়াল রাখুন চুলে। সামনে একটু ফোলানো বা টিজিং স্টাইলে রোদচশমা চমৎকার লাগে। পেছনে পনিটেল, ফ্রেঞ্চ রোল বা ফ্রেঞ্চ করে পাঞ্চ ক্লিপ দিয়ে আটকালেও ভালো লাগে। চুল কোমরের ওপরে হলে ছেড়েও রাখতে পারেন।
এই সময়ে বড় ফ্রেমের বেশ রংচঙে রোদচশমাই বেশি চলছে। বেগুনি, লাল, নীল, সবুজ ইত্যাদি রঙের রোদচশমা পরতে দেখা যাচ্ছে।
আফরোজা কামাল আরও বলেন, রোদচশমায় নিজের রুচি ও ব্যক্তিত্ব ফুটিয়ে তুলতে যা কখনো করবেন না তা হলো—
 কোনো ঘরে বা অনুষ্ঠানে প্রবেশের আগে অবশ্যই রোদচশমা খুলে রাখবেন। এটি সামাজিক ভদ্রতা।
 কখনোই রোদচশমা চোখে রেখে কথা বলবেন না, এমনকি ছোট শিশুদের সঙ্গেও নয়।
 চেষ্টা করবেন ভালো মানের চশমা পরতে।
অভিজাত বিপণিগুলোতে মিলবে ব্র্যান্ডেড রোদচশমা। ঢাকার এলিফ্যান্ট রোডে নিউ লুক চশমা বিপণির বিক্রেতা মো. জহির বললেন, দেশি-বিদেশি চশমায় আজকাল নতুন নকশা এসেছে, যা তরুণেরা খুব পছন্দ করছেন। চশমার ডাঁটায় হরেক নকশা, পাথরের কাজও করে নিচ্ছেন অনেকে। কারুকাজ আর ফ্রেম করা রোদচশমাই এখনকার ফ্যাশন।


ঢাকার ধানমন্ডি, গুলশান, উত্তরা ও বনানীর বড় শপিং মলগুলোতে মিলবে ব্র্যান্ডেড রোদচশমা। দাম পড়বে ২ হাজার থেকে ৮ হাজার টাকার মধ্যে। নিউমার্কেট, এলিফ্যান্ট রোড, কাকরাইলে পাবেন নন-ব্র্যান্ডেড রোদচশমা। দর-দামের ভিত্তিতে সেখানে দাম পড়বে ১৫০ থেকে ৪০০ টাকা।
রোদচশমায় রঙের বাহার দেখা যাচ্ছে বেশ।

মঙ্গলবার, ১৫ মে, ২০১২

গরমে কনেসাজ

বিয়ে তো দিনক্ষণ-মাস হিসাব করে হয় না। শীতকাল বিয়ের মৌসুম হলেও সারা বছর বিয়ের অনুষ্ঠান হয়ে থাকে। রোদ-গরমে বিয়ের অনুষ্ঠান হলে বাড়তি প্রস্তুতি নিতে হয়। বিয়ের পোশাক ও সাজসজ্জা করার আগে একটু কৌশলী হতে হবে। যেহেতু গরমের মধ্যে দীর্ঘ সময় এর আনুষ্ঠানিকতা চলে, ফলে আরামদায়ক পোশাক ও হালকা সাজকেই প্রাধান্য দিতে হয়। 

 ‘গরমে বউয়ের সাজ ও পোশাকে বেশি গুরুত্ব দিতে হবে। এই বিশেষ দিনের শাড়ি হিসেবে বেনারসিকেই অনেকে বেছে নিতে চান। কাতান, লাল বেনারসি শাড়ি পরলেও কেনার সময় খেয়াল রাখতে হবে যেন ভারী কাজের না হয়। লাল বেনারসি পরলে গয়না হতে পারে হালকা ধরনের। গরমে হালকা সাজের কোনো বিকল্প নেই। বেনারসির পাশাপাশি জামদানি, মসলিন, এমনকি সিল্কও পরতে পারেন। বিয়েতে এখন সাদার বেশ চল রয়েছে। চাপা সাদা, হালকা হলুদ-সবুজ-নীল, হালকা গোলাপি, মভ বা পিচ রঙের শাড়ি বেছে নিতে পারেন। এসব শাড়ির সঙ্গে মুক্তার গয়না, রুপার গয়না বেশ মানানসই। বিয়েতে সোনার গয়না তো পরবেনই, তবে শাড়ির রঙের সঙ্গে মিলিয়ে গোল্ড প্লেটেড গয়নাও ভালো দেখাবে। এটি ভিন্নমাত্রা তৈরি করে।’

সাজসজ্জা
বিয়ের জন্য শারীরিক ও মানসিক প্রস্তুতি লাগে। অন্তত ১৫ দিন আগে থেকে ভালোভাবে বডি ম্যাসাজ, স্ক্রাব বা স্পা করাতে হবে। এতে সব ধরনের ক্লান্তি দূর হবে। ভ্রু প্লাক, ফেসিয়াল ও ওয়াক্স করাতে চাইলে বিয়ের চার-পাঁচ দিন আগে করানোই ভালো। বিয়ের আগে বিউটি পারলারে গিয়ে আগাম বুকিং দিয়ে আসবেন। আপনি যাঁর কাছে সাজতে চান, আগেই তাঁর সঙ্গে কথা বলে নিন। ত্বকের ধরন, রং ও শারীরিক গড়নের ওপর ভিত্তি করে সাজটা হতে হবে। শুরুতে ভালোভাবে মুখটা পরিষ্কার করে নিন। এরপর চোখের নিচে বা মুখে কোনো দাগ থাকলে সেখানে কনসিলার লাগিয়ে ভালোভাবে মিশিয়ে নিতে হবে। এরপর ব্যবহার করুন পাউডার ফাউন্ডেশন। গরমে ক্রিম ফাউন্ডেশন ব্যবহার না করাই ভালো। এ ছাড়া কেউ চাইলে হালকা গোলাপি বা হলুদাভ ভাব আনতে প্যানকেক ব্যবহার করতে পারেন। তবে হালকা রঙের শাড়ির সঙ্গে হালকা সাজ হলেও চোখের সাজকে বেশি প্রাধান্য দিতে হবে। এ সময় গ্লিটার ব্যবহার করা ঠিক হবে না। চোখে উজ্জ্বল রঙের ব্যবহার বেড়েছে। সোনালি, ব্রোঞ্জ, সবুজ, নীলসহ যেকোনো উজ্জ্বল রং শাড়ির রঙের সঙ্গে মিলিয়ে চোখের সাজ করা যেতে পারে। চাইলে স্মোকিও করতে পারেন চোখকে। ঠোঁটে তখন হালকা গোলাপি, ন্যাচারাল রং, পিচ বা মভ রং ব্যবহার করলে আকর্ষণীয় দেখাবে। আর লাল রঙের লিপস্টিক হাল ফ্যাশনে জনপ্রিয়। এটি ব্যবহার করলে চোখের সাজ গাঢ় করবেন না। কপালে টিপ পরতে বা আঁকতে পারেন। আবার বড় টিকলি পরলে টিপ না পরলেও চলে। চুল বড় হলে ছেড়ে রাখলেও অন্য রকম সুন্দর লাগে। এ ছাড়া খোঁপা, পার্শ্বসিঁথি ও খানিকটা কোঁকড়া করে চুলটাকে নানা কায়দায় বাঁধতে পারেন। এ সময়ে বেলি ফুলের সমাহার হয়। বেণি করে বা পুরো খোঁপায় বেলি ফুল ব্যবহার করতে পারেন। লাল বা সাদা শাড়ি পরলে হাতেও পেঁচিয়ে নিতে পারেন বেলি ফুল। তবে বিয়ের আগে স্বাস্থ্যোজ্জ্বল ত্বক পেতে অবশ্যই খাওয়ার দিকে বিশেষ যত্ন দিতে হবে। পুষ্টিযুক্ত খাবার, ফল ও বেশি করে পানি খেতে হবে।

হাত-পায়ের দাগ দূর করতে


রোজকার আয়োজনে ত্বকের যত্ন বললেই ঘুরেফিরে মুখের যত্নই প্রধান হয়ে ওঠে। কিন্তু সেই সঙ্গে হাত-পায়ের যত্ন না নিলে ত্বকের রঙে দেখা যায় বৈসাদৃশ্য। অবহেলায় হাত ও পায়ে দেখা যায় কালো দাগ। 

প্রতিদিনের চলাফেরায় স্বাভাবিকভাবেই দেহে দাগ পড়ে। অতি ব্যবহার ও সারাক্ষণ কিছু না কিছুর স্পর্শের কারণে কনুই ও হাঁটুতে বেশি দাগ পড়ে। আঙুলের গিঁটে, গোড়ালিতে ও নখে কালো ছোপ পড়তে দেখা যায়। এ ক্ষেত্রে প্রাকৃতিক যত্নের কোনো বিকল্প নেই। ঘরে বসেই হাত-পায়ের কালো ছোপ দূর করতে কী করতে পারেন, তাতে চোখ বুলিয়ে নিন ঝটপট। কালো দাগ দূর করতে সপ্তাহে এক দিন স্ক্রাব ব্যবহার করতে পারেন। এ জন্য প্রয়োজন হবে এক টেবিল-চামচ করে চালের গুঁড়া, ময়দা, দুধ, শসার রস ও লেবুর রস। এর সঙ্গে মেশাবেন এক টেবিল-চামচ নারকেল তেল অথবা তিলের তেল। অলিভ অয়েলও মেশানো যায়। আর লাগবে আধা চা-চামচ মধু। ক্রিমের মতো করে মিশিয়ে দাগে ঘষবেন। তারপর ধুয়ে টোনিং করতে হবে। টোনিং করতে শুধু দুধ ও মধুর ক্রিমের মতো মিশ্রণ ব্যবহার করতে পারেন। হালকা ঘষে পানিতে ধুয়ে ময়েশ্চারাইজিং লোশন বা ক্রিম লাগাতে হবে। আরও সহজ পদ্ধতিতেও দাগ দূর করতে পারেন। এক চা-চামচ লেবুর রসে এক চা-চামচ মধু মিশিয়ে দাগে ঘষতে পারেন। সরাসরি কখনো লেবুর রস দাগে মাখবেন না। লেবুর রস ত্বকে সহ্য না হলে অ্যালোভেরা বা ঘৃতকুমারী ব্যবহার করতে পারেন। দুই টেবিল-চামচ ঘৃতকুমারীর শাঁসে এক চা-চামচ মধু মিশিয়ে দাগে মাখালেও দাগ কমবে। অনেকের নখে কালো দাগ পড়তে দেখা যায়। তারা পা ভিজিয়ে রেখে ফাইলার দিয়ে প্রথমে নখের কোনা পরিষ্কার করে নেবেন। তারপর শুধু নখে লেবুর টুকরো ঘষবেন। নখে লেবু ক্ষতি করে না। খেয়াল রাখবেন যেন চামড়ায় লেবুর রস না লাগে।
প্রতিদিন ঘরে ফিরে কুসুম গরম পানিতে লবণ ও লেবুর রস মিশিয়ে ১০ মিনিট পা ভিজিয়ে রাখতে পারেন। ফলে পা পরিষ্কার থাকবে, পায়ে কোনো দুর্গন্ধ থাকবে না।

মঙ্গলবার, ১ মে, ২০১২

গরমে চুলের যত্ন ( Nurse your Hair during Summer)

ভ্যাপসা গরম। ঘেমে নেয়ে একাকার হতে হয়। ফলে ত্বকের সঙ্গে সঙ্গে চুলেও তেলচিটচিটে ভাব চলে আসে। 

গরমে চুল কীভাবে স্বাস্থ্যোজ্জ্বল ও ঝরঝরে রাখা যায়- ‘বাড়ির বাইরে বের হলে চুলে ধুলো পড়ে। রোদ-গরমের প্রকোপ তো আছেই। ঘামের কারণে চুলের গোড়া ভিজে যায়। এ কারণে ঝরঝরে দেখায় না চুল। বিশেষ করে, যাদের তৈলাক্ত চুল, তাদের এ ধরনের পরিস্থিতিতে বেশি পড়তে হয়। তাই বলে বাইরে বের হওয়া তো আর বন্ধ থাকবে না। একটু নিয়ম মেনে চুলের নিয়মিত যত্ন নিলেই মুশকিল আসান।



‘চুল মসৃণ ও ঝরঝরে দেখাতে প্রতিদিন শ্যাম্পু ও কন্ডিশনার ব্যবহার করতে হবে। তবে তৈলাক্ত চুল হলে দুই সপ্তাহ অন্তর কন্ডিশনার ব্যবহার করা যেতে পারে। অনেকে প্রতিদিন শ্যাম্পু করেন, কিন্তু চুল ভালোমতো না শুকানোর কারণে তেলতেলে হয়ে যায়। এ কারণে চুল পরিষ্কার করার পর তোয়ালে দিয়ে ভালোভাবে মুছে ফেলতে হবে। কেউ কেউ গামছা দিয়ে চুল ঝাড়েন, এটিও ঠিক নয়। এতে চুলের গোড়া নরম হয়ে যায়। পরে চুল পড়ার সমস্যা দেখা দেয়। বাড়িতে টেবিল-ফ্যান থাকলে তাতেও চুল শুকিয়ে নিতে পারেন। চুল শুকানোর জন্য নিয়মিত বৈদ্যুতিক যন্ত্র ব্যবহার করা উচিত নয়। মাঝেমধ্যে করলেও তেল দিয়ে চুলে মালিশ করতে হবে। চুল শুকিয়ে বের হবেন। এবার কোনো ক্লিপ বা ব্যান্ড দিয়ে চুলটাকে আটকে দিন। তা না হলে গরমে চুলের গোড়া বেশি ঘামবে। অফিসে বা গন্তব্যে পৌঁছে আবার চুল খুলে দিন। ব্যাগে অবশ্যই চিরুনি রাখবেন। দিনে দুই থেকে তিনবার চুল আঁচড়াবেন। এ ছাড়া অবসর পেলেই চুলের মধ্যে হাত দিয়ে বিলি কাটবেন। এতে বাতাস ঢুকবে; ঘাম শুকিয়ে যাবে।’
চুলের কয়েকটি প্যাক
গরমে চুল ভালো রাখতে বাড়িতে বসে এই প্যাকগুলো ব্যবহার করতে পারেন। এতে ঝলমলে ও মসৃণ হবে আপনার চুল।
রুক্ষ চুলের যত্নে: টক দই, মধু ও পাকা কলা পেস্ট করে সপ্তাহে এক দিন ব্যবহার করতে পারেন।
তৈলাক্ত চুলের যত্নে: কলা ছাড়া যেকোনো মৌসুমি ফলের সঙ্গে টকদই মিশিয়ে প্যাক তৈরি করুন। আবার শুধু ফলের প্যাকও ব্যবহার করা যেতে পারে। এ ছাড়া নিয়মিত হেনাপ্যাক ব্যবহার করলে চুল ঝলমলে হয়।
আসল কথা হলো, চুল পরিষ্কার রাখতে হবে। প্রয়োজনে যেকোনো বিউটি স্যালনে গিয়ে হেয়ার স্পা, হেয়ার প্রোটিন ট্রিটমেন্ট করাতে পারেন।

সোমবার, ২৬ মার্চ, ২০১২

পায়ের যত্ন ( Leg and Feet care tips )

এই ঋতুতে মুখের ত্বকের বিশেষ যত্ন নিলেও পায়ের যত্নের কথা হয়তো অনেকেই ভুলে যান। অথচ এই ঋতুতে ধুলাবালি এবং হাঁটার কারণে পায়ের ত্বক নষ্ট হয়ে যায়। রোদের তীব্রতার কারণে পা পুড়েও যায়। তবে একটু সাবধান হলেই পা থাকবে সুরক্ষিত।

গরমের কারণে অনেকেই এ সময় ক্যাপ্রি, থ্রি কোয়ার্টার প্যান্ট কিংবা উঁচু সালোয়ার পরেন। এ কারণে পায়ের অনেকটা অংশই খোলা থাকে। তাই এই ঋতুতে প্রতিদিন পায়ের দরকার বিশেষ যত্ন। প্রতিদিন গোসলের সময় পায়ের এই যত্ন নেওয়া যায়। গোসল শেষে একটু উঁচু জায়গায় বসে পিউমিস স্টোন (পা ঘষার পাথর) দিয়ে পায়ের গোড়ালির অংশ ঘষতে হবে। তবে পায়ের চামড়ার পাতলা অংশ ঘষতে হবে ব্রাশ দিয়ে। এরপর শ্যাম্পু দিয়ে পা হালকা করে ঘষে পানি দিয়ে ধুয়ে ফেলতে হবে। ভেজা পা তোয়ালে দিয়ে মুছে লোশন কিংবা জলপাইয়ের তেল মাখতে হবে।

সপ্তাহে একবার ঘরে বসেই পেডিকিউর করা, ঘরে পেডিকিউর করতে হলে লাগবে নেইল কাটার, নেইল ফাইলার, কিউটিকল কাটার, পুশার, তোয়ালে, পেডিকিউর লবণ, পিউমিস স্টোন, ব্রাশ, শ্যাম্পু, বড় একটা গামলা ও গরম পানি। সব জিনিস একসঙ্গে নিয়ে বসতে হবে, যাতে ভেজা পা নিয়ে বারবার না উঠতে হয়।
প্রথমে নখ কেটে ফাইলার দিয়ে ফাইল করে নিতে হবে। এরপর একটা পাত্রে গরম পানি নিয়ে তার সঙ্গে পেডিকিউর লবণ অথবা খাওয়ার লবণ দিয়ে কিছুটা শ্যাম্পু মিশিয়ে ফেনা তৈরি করতে হবে। সেই পানিতে পা কিছু সময় ভিজিয়ে রেখে ঘষতে হবে। কিউটিক্যাল কাটার দিয়ে নখের চার পাশের কিউটিক্যাল কাটতে হবে। নখের ওপরের অংশ ঘষে পরিষ্কার করতে হবে। এরপর পানি দিয়ে ধুয়ে ফেলতে হবে। তোয়ালে দিয়ে পা মুছে পছন্দ অনুযায়ী নেইলপলিশ লাগাতে পারেন। পা নরম রাখতে লোশন কিংবা জলপাইয়ের তেল মাখতে হবে। সে ক্ষেত্রে পায়ের তালু থেকে প্রতিটি আঙুলের কোনায় কোনায় ম্যাসাজ করতে হবে।
বাইরে বের হওয়ার সময় মুখের মতো পায়েও সানস্ক্রিন লোশন ব্যবহার করতে হবে। 

গরমে গোলাপি মেকআপ

বৈশাখ আসতে এখনো বাকি। কিন্তু গরমের আঁচ এখনই পাওয়া যাচ্ছে। পরিবর্তন চলে এসেছে সাজসজ্জায় এবং মেকআপে। চড়া মেকআপ নয়, বরং গরমে হালকা মেকআপই ভালো। হালকা গোলাপি আভায় রাঙিয়ে নিতে পারেন আপনার গ্রীষ্মের লুক। শুধু দেখতেই ভালো লাগবে না, মনেও এনে দেবে স্নিগ্ধতা।

গরমের সময়টায় দিনের বেলায় হালকা গোলাপি এবং রাতের বেলায় গাঢ় গোলাপি টোনে সাজে ভিন্নতা আনা যায় সহজেই। তবে গোলাপি মেকআপ টোনের সঙ্গে ঐতিহ্যবাহী নয় বরং আধুনিক লুক আনতে হবে। 

গোলাপি ব্লাশঅন, লিপস্টিক দিয়ে সাজিয়ে নিতে পারেন মুখটা। আর এ ক্ষেত্রে চোখে অন্য কোনো রং না দিয়ে হালকা গোলাপি শ্যাডোই ব্যবহার করুন। তবে সেটা যেন খুব হালকা হয়। চোখের ওপর আইলাইনার টেনে নিতে পারেন। আর মাসকারা তো দেবেনই।
এ মেকআপটি করার সময় টুকটাক কিছু বিষয় খেয়াল রাখুন:
 হালকা ও গাঢ় গোলাপি মেকআপের সঙ্গে মিলিয়ে গয়না পরতে হবে। হালকা টোনের সঙ্গে মুক্তা, রুপা, হীরা অথবা জাংক গয়না বেশি মানানসই। মেকআপ যদি গাঢ় গোলাপির হয়, তাহলে বেছে নিন সোনার গয়না।
 লিপস্টিক ও ব্লাশঅন যদি গোলাপি হয়, তাহলে চোখটা স্মোকিভাবে সাজাতে পারেন।
 শুধুু কালো কাজল ব্যবহার না করে মভ, ধূসর, নীল, সবুজ রংগুলো ব্যবহার করতে পারেন।
 কাজল দেওয়ার আগে চোখের নিচে একটু পাউডার ছিটিয়ে নিন। এতে কাজল ছড়িয়ে পড়বে না। কাজল লাগিয়ে ব্রাশ দিয়ে হালকাভাবে পাউডার সরিয়ে নিতে হবে।
 গোলাপি রংটা যেহেতু আধুনিক, সে কারণে চুলের বাঁধনটাও পুরোনো ধাঁচে না করাই ভালো। খোঁপা কিংবা বেণি বাদ দিয়ে হাই বান, পনিটেল, উল্টিয়ে চুল আঁচড়ানোই বেশ লাগবে।

শুক্রবার, ১৬ মার্চ, ২০১২

হালকা সাজ টুকটুকে ঠোঁট

পান খেয়ে ঠোঁট লাল না করলেও হালফ্যাশনের সাজ হলো লাল রঙের লিপস্টিকে ঠোঁট রাঙিয়ে নেওয়া। অনেকে মনে করেন, শুধু জমকালো সাজের সঙ্গেই মানায় চড়া লাল লিপস্টিক। এ ধারণা ভুল। সাদামাটা সাজের সঙ্গেও ঠোঁট রাঙিয়ে নিতে পারেন লাল রঙে।

তবে লাল লিপস্টিক ব্যবহারের ক্ষেত্রে গায়ের রং কেমন, সেদিকে লক্ষ রাখতে হবে । গায়ের রং চাপা হলে লালের মাঝে গোলাপি কিংবা কমলার প্রাধান্য রয়েছে এমন লিপস্টিক ব্যবহার না করাই ভালো। সে ক্ষেত্রে কালচে লাল লিপস্টিক ব্যবহার করা উচিত। আবার গায়ের রং হলদেটে হলে লাল কমলা শেডের লিপস্টিক ব্যবহার করা উচিত নয়। ম্যাজেন্টা লাল লিপস্টিক ব্যবহার করাই ভালো। গায়ের রং উজ্জ্বল হলে লালের মাঝে যেকোনো শেড কিংবা টকটকে লাল লিপস্টিক ব্যবহার করলে ভালো দেখায়।
  লাল লিপস্টিক যেকোনো অনুষ্ঠানেই ব্যবহার করা যায়। তবে লক্ষ রাখতে হবে, অনুষ্ঠান কোন সময়ে হচ্ছে এবং ঠোঁটের সঙ্গে চোখের সাজ কেমন হচ্ছে। অনুষ্ঠান রাতে হলে লাল-সোনালি আভার লিপস্টিক ব্যবহার করা যায়। তবে এ ক্ষেত্রে চোখে গ্লিটারযুক্ত শ্যাডো ব্যবহার না করাই ভালো। চোখে কাজল আর হালকা মাশকারা দেওয়া যেতে পারে। যেহেতু লিপস্টিকের রং চড়া, তাই মুখে বেশি মেকআপ না দেওয়াই উচিত। হালকা বেজ মেকআপ দেওয়া যায়। কারণ, লাল লিপস্টিক যদি ছড়িয়ে যায় তবে দেখতে খুব বাজে লাগে। লিপলাইনার দিয়ে ঠোঁট এঁকে নিয়ে শুধু ঠোঁটের মাঝের অংশে লিপস্টিক দিন। এরপর ব্রাশ দিয়ে ছড়িয়ে দিন। ঠোঁট আরও আকর্ষণীয় করতে লাল রঙের লিপস্টিকের ওপর গ্লস ব্যবহার করা যায়। ঠোঁট পাতলা দেখাতে ম্যাট লিপস্টিক ব্যবহার করা যায়। আর পুরু দেখাতে লিপস্টিকের ওপর গ্লস ব্যবহার করা যায়।
  

  তবে লিপস্টিক ব্যবহার শেষে ঠোঁট থেকে তুলতে নরম কাপড় কিংবা তুলা ব্যবহার করতে হবে এবং ঠোঁট নরম রাখতে লিপবাম ব্যবহার করতে হবে।

বসন্ত ঋতুতে ত্বকের যত্ন

বসন্ত মানেই ঝরাপাতার অবসান আর নতুন পাতার আবির্ভাব। তবে শুষ্কতা আর রুক্ষতার কারণে এ সময় প্রকৃতিতে ধুলাবালি বেড়ে যায়। ধুলাবালির সঙ্গে সঙ্গে সূর্যের তির্যক আলোতেও ক্ষতিগ্রস্ত হয় ত্বক। তাই এই ঋতুতে ত্বকের দরকার বিশেষ যত্ন।
 
এ সময় সানবার্ন খুব বেশি হয়। কেবল মুখেই নয়, পিঠে এবং হাত-পায়েও হয়। তাই ব্যাগে সব সময় রাখতে হবে একটি ছাতা। বাইরে যাওয়ার আগে সানস্ক্রিন লোশন কিংবা জেল ব্যবহার করা উচিত। এ ছাড়া ব্যবহূত অন্য প্রসাধনী—লিপস্টিক ও পাউডারেও যেন এসপিএফ (সান প্রোটেক্টিভ ফিল্টার) ১৫-এর বেশি থাকে। রোদ থেকে চোখ রক্ষা করতে ব্যাগে রাখা যেতে পারে সানগ্লাস।

যাঁরা সানস্ক্রিন লোশন ব্যবহার করতে পারেন না, তাঁরা বারবার পানি দিয়ে মুখ ধুয়ে ফেলতে পারেন। সারা দিনের কাজ শেষে রাতে নিতে পারেন ত্বকের বাড়তি পরিচর্যা। এ জন্য মুখটা ক্লেনজার দিয়ে পরিষ্কার করতে হবে। এরপর কোমল সাবান দিয়ে মুখ ধুয়ে ত্বকের ধরন অনুযায়ী রাতে ব্যবহারের (নাইট ময়েশ্চারাইজিং) ক্রিম মাখতে হবে। ধুলাবালির কারণে ব্ল্যাক ও হোয়াইট হেডস জমে নাকে, ঠোঁটের নিচে। ব্ল্যাক ও হোয়াইট হেডসে জমা স্থানে গরম পানির ভাপ দিয়ে পাঁচ মিনিট পর প্লাকার দিয়ে নিজেই তুলে ফেলতে পারেন। ধুলাবালি থেকে চুল রক্ষা করতে পোশাকের সঙ্গে মিলিয়ে মাথায় একটা স্কার্ফ অথবা ব্যান্ডেনা বেঁধে রাখতে পারেন। নারকেল তেল ও জলপাইয়ের তেল একসঙ্গে গরম করে চুলে ম্যাসাজ করে শ্যাম্পু করলে চুল হয় ঝরঝরে। এ ছাড়া চুলের বাড়তি যত্নে টক দই, কলা, পেঁপে দিয়ে ঘরে তৈরি প্যাক ব্যবহার করলে চুল ভালো থাকে।
হাত-পায়ের যত্নে ঘরে বসেই নিজেই করে নিতে পারেন পেডিকিউর, ম্যানিকিউর। এ ছাড়া মাসে একবার পারলারে গিয়ে ফেসিয়াল করলে ত্বক ভালো থাকে।
দিনে অন্তত আট-নয় গ্লাস পানি এবং প্রচুর পরিমাণে ফল, সবজি আর সালাদ খাওয়া দরকার ।

রবিবার, ৪ মার্চ, ২০১২

ঘরে বসে মেকআপ

একটু পরই যেতে হবে পার্টিতে; পারলারে যাওয়ার সময়ও নেই আপনার হাতে। সাজতে হবে ঘরেই। কী করা? 


মেকআপের কিছু প্রাথমিক নিয়ম জানা থাকলে ঘরে বসেই মেকআপ করতে পারেন আপনিও। এ জন্য প্রয়োজনীয় উপকরণগুলো হলো প্যানস্টিক, ডাস্ট পাউডার, প্যানকেক, পাফ ও ফোম, ব্লাশন, কয়েক রকম আইশ্যাডো, মাশকারা, লিপস্টিক ও গ্লস, বিভিন্ন রকম চোখের, গালের ও ঠোঁটের ব্রাশ। প্যানকেক ও ডাস্ট পাউডার ত্বকের রং অনুযায়ী বাছাই করবেন। ফর্সারা গোলাপি, শ্যামলারা বাদামি আর কালোরা গাঢ় রং বেছে নেবেন।
মেকআপের আগে চাই ত্বকের যত্ন। ত্বক শুষ্ক হলে মুখ ধুয়ে হালকা করে তরল ময়েশ্চারাইজার লাগিয়ে নেবেন। ত্বক তৈলাক্ত বা মিশ্র হলে টোনার বা ফেসওয়াশ দিয়ে মুখ ধুলেই চলবে। অতিরিক্ত তৈলাক্ত হলে বরফ বেঁধে মুখে ঘষে নেবেন।
মেকআপের আগে প্রথমে আঙুলের ডগায় প্যানস্টিক নিয়ে মুখের কালো দাগ ঢেকে দিতে হবে। এরপর পাফের সাহায্যে পুরো মুখে ডাস্ট পাউডার লাগাতে হবে ও পানি স্প্রে করতে হবে হালকাভাবে। আঙুলের সাহায্যে চেপে পাউডার মুখে বসিয়ে নিতে হবে। পাউডার বসে গেলে ভেজা ফোমের সাহায্যে প্যানকেক লাগিয়ে নিন। প্রথমে টি জোন, অর্থাৎ কপাল, নাক ও চিবুকে লাগাতে হবে। তারপর আঙুলের সাহায্যে মুখের অন্যান্য অংশে পুরোপুরি মেশাতে হবে। হাতেও প্যানকেক লাগাতে হবে, যাতে ত্বকের রঙে বৈসাদৃশ্য দেখা না যায়। হালকা ফেসপাউডার বুলিয়ে গালের ভাঁজে ব্লাশনের পরশ দিন। তৈরি হয়ে গেল মেকআপের বেজ।
অনুষ্ঠানের সময় মাথায় রেখে চোখের সাজ করা ভালো বলেই মনে করেন আফরোজা কামাল। তিনি বলেন, দিনে হালকা সাজই মানানসই। পোশাকের সঙ্গে মিলিয়ে চোখে ন্যাচারাল টোনের শেড, যেমন—সোনালি, গোলাপি, বা বাদামি শেড ভালো লাগবে। কাজল ব্যবহার করতে পারেন, সঙ্গে ভারী মাশকারা থাকবে। রাতের অনুষ্ঠান হলে গাঢ় শেড ব্যবহার করবেন। ব্লাশনও গাঢ় হবে।
ঠোঁট লাইনার দিয়ে এঁকে নেওয়া ভালো। দিনের বেলা হালকা, যেমন—বাদামি, বিজ, গোলাপি ইত্যাদি রঙের লিপস্টিক বা শুধু গ্লস ব্যবহার করতে পারেন। রাতের অনুষ্ঠানে গাঢ় লিপস্টিক কিংবা গাঢ় শেডের গ্লস ভালো মানাবে। আফরোজা কামাল আরও যোগ করলেন, মেকআপের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ অংশ হলো, সঠিক নিয়মে মেকআপ তোলা। তাহলেই ত্বকে মেকআপের কোনো খারাপ প্রভাব পড়বে না।
তাহলে আর দেরি কেন? ঘরে বসেই হয়ে যাক পারলারের সাজ।

শুক্রবার, ১৭ ফেব্রুয়ারী, ২০১২

ঘরে বসেই ফেসিয়াল

সুস্থ ও সুন্দর ত্বক মানেই পরিষ্কার ত্বক। আর যেনতেনভাবে তো ত্বক পরিষ্কার করা যায় না। মাসে একবার বিউটি পারলার বা স্যালনে গিয়ে ফেসিয়াল করলে ভালো। কিন্তু ব্যস্ততায় সেই সময় বা সুযোগ হয়ে ওঠে না। চাইলে ঘরে বসেই করতে পারেন ফেসিয়াল। ত্বকের ধরন বুঝে বাড়িতেই কীভাবে করবেন ?

তৈলাক্ত ত্বক
তৈলাক্ত ত্বক হলে প্রথমে তেল ও ক্ষারমুক্ত ফোমিং ক্লিনজার দিয়ে মুখ পরিষ্কার করে নিতে হবে। এ সময় বৃত্তাকার গতিতে (সার্কুলার মোশনে) হাতের আঙুল দিয়ে মুখের এক জায়গা থেকে ম্যাসাজ শুরু করতে হবে। পুরো মুখ, গলা ক্লিনজার দিয়ে ম্যাসাজ শেষে আগের জায়গায় ফিরে আসতে হবে। এভাবে পাঁচ মিনিট করতে পারেন। তৈলাক্ত ত্বকে সাধারণত ব্ল্যাক হেডস ও হোয়াইট হেডসের সমস্যা বেশি থাকে। হালকা একটু স্টিম দিয়ে নিলে ব্ল্যাক হেডস তুলতে সহজ হয়। বাড়িতে স্টিম মেশিন না থাকলে কোনো বড় বাটিতে বা মগে গরম পানি নিয়ে মাথার চারপাশে তোয়ালে দিয়ে ঢেকে গরম ভাপ নিতে পারেন। এতে লোমকূপ খুলে যাবে। ব্ল্যাক হেডস, হোয়াইট হেডস তোলার স্ট্রিপ ব্যবহার করে এটি তুলতে হবে। এরপর মুখ মুছে মুলতানি মাটি ও চন্দনগুঁড়ার প্যাক ভালোভাবে মুখ-গলায় ১০-১৫ মিনিট লাগিয়ে রাখুন। প্যাক শুকিয়ে গেলে পানি দিয়ে ভালোভাবে মুখ পরিষ্কার করে নিন। এরপর তেলমুক্ত কোনো ময়শ্চারাইজার ব্যবহার করতে হবে। তৈলাক্ত ত্বকে ব্রণের সমস্যা থাকে, এ কারণে স্ক্রাব ব্যবহার না করাই ভালো। করতে চাইলে শুধু টি-জোনে, অর্থাৎ কপাল ও নাকে মৃদু স্ক্রাব ব্যবহার করতে পারেন।

শুষ্ক ত্বক
ক্রিমযুক্ত মৃদু স্ক্রাব দিয়ে শুরুতে মুখটা আলতোভাবে পাঁচ মিনিট ম্যাসাজ করে নিতে হবে। এরপর তুলার সাহায্যে দুধযুক্ত ক্লিনজার দিয়ে আবার মুখ পরিষ্কার করে নিন। যদি ব্ল্যাক হেডসের সমস্যা থাকে, তাহলে হালকা স্টিম নিয়ে তা তুলে ফেলতে হবে। এরপর হাইড্রেটিং মাস্ক—যেমন মধু, দুধের সর, কলা দিয়ে একটা প্যাক—তৈরি করতে পারেন। ১০-১৫ মিনিট রেখে মুখ ধুয়ে ফেলুন। এখন ভারী ধরনের কোনো ময়শ্চারাইজার আঙুলের ডগায় নিয়ে ভালোভাবে মুখে ব্যবহার করতে হবে।

মিশ্র ত্বক
এ ধরনের ত্বকে টি-জোন তৈলাক্ত থাকে। আর বাকি অংশ থাকে শুষ্ক। ব্রণ বা অ্যালার্জির সমস্যা না থাকলে টি-জোনে আলতোভাবে মৃদু স্ক্রাব ব্যবহার করতে পারেন। তবে স্ক্রাব ব্যবহারের আগে তেলমুক্ত ময়শ্চারাইজিং ক্লিনজার বা ফোমিং ফেসিয়াল দিয়ে মুখ পরিষ্কার করে নিন। সামান্য স্টিম নিয়ে ব্ল্যাক হেডস তুলে নিতে পারেন। এরপর গোলাপ ফুলের পাপড়ির পেস্ট, গোলাপজল, টক দই ও মধু দিয়ে একটি প্যাক তৈরি করে ব্যবহার করতে পারেন। প্যাক শুকিয়ে গেলে মুখ ভালোভাবে পানি দিয়ে ধুয়ে ফেলুন। তেলমুক্ত ময়শ্চারাইজার এখন মুখে ব্যবহার করুন। এ ছাড়া সংবেদনশীল ত্বকে অনেক সময় ফেসিয়াল করলে ব্রণ ও র‌্যাশের সমস্যা দেখা দেয়। সে ক্ষেত্রে ভালো কোনো ব্র্যান্ডের ফেসিয়াল ওয়াইপস দিয়ে মুখ পরিষ্কার করে নিতে পারেন।

চোখে-নখে রঙের খেলা (Nail Color)

সাজের কোনো নিয়ম আছে, কে বলল শুনি? যদি থেকেও থাকে, ভেঙে দিতে ক্ষতি কী? খুব ভারী মেকআপ কিশোর বয়সে মোটেও মানায় না। কিন্তু উজ্জ্বল সব রঙের ব্যবহারে চোখ আর নখ সাজাতে নেই মানা; বরং তা যেন এক মজার খেলা।

চোখ সাজানোটাই তাঁর সবচেয়ে প্রিয়। আরও একটা প্রিয় কাজ নখ সাজানো।  কিশোরী বয়সটাতে সাজতে গিয়ে মায়ের বকুনি খাননি, এমন কেউ খুব কমই আছেন। কোমল-কচি ত্বকখানি সাজের কারণে নষ্ট হয়ে যাবে কিংবা এতে ব্রণের সমস্যা হতে পারে ভেবে থাকেন অনেকেই। বিষয়টি কিন্তু তেমন নয়। সাজগোজের পর চাই একটু বাড়তি যত্ন। মেকআপের আগে অবশ্যই ত্বককে প্রয়োজনমতো ময়েশ্চারাইজার দিতে হবে। তারপর শুরু করুন সাজের পালা। কিশোরীদের ত্বক এমনিতেই সজীব দেখায়। তাই অতিরিক্ত ফাউন্ডেশন বেজ হিসেবে নেওয়ার কোনো প্রয়োজন নেই; বরং হালকা পাউডারই যথেষ্ট। ইচ্ছেমতো রং মাখিয়ে নিন চোখে। চোখের মেকআপটাই ফুটিয়ে তুলবে আপনার উচ্ছলতা আর সব না-বলা কথা।

একেক উপলক্ষে চোখ সাজিয়ে তুলুন একেক রূপে। হিম হিম শীতে চোখের সাজেও রাখতে পারেন হিম আবেশ। নীল আইশ্যাডো চোখের পাতাজুড়ে লাগিয়ে তার সঙ্গে গাঢ় নীল-লাইনার টেনে নিন পাপড়ি ঘেঁষে। রুপালি, হালকা নীলে করে নিন ভুরুর নিচের হিম আবেশ। চোখের নিচে গাঢ় নীল কাজল টেনে নিয়ে পাপড়িগুলোয় মাসকারা দিন আলতো করে। শীতফ্যাশনের হুডি টি-শার্ট, সোয়েটারের সঙ্গে বেশ দেখাবে আপনাকে। চোখের সাজের সঙ্গে মিল রেখে হাতের নখগুলোও সাজিয়ে তুলুন নীলে। প্রথমে নখে হালকা নীল রঙের নেইলপলিশের বেজ নিন। তার ওপর গাঢ় নীল ও সাদা পাথর জুড়ে দিন। চাইলে চোখেও জুড়ে দিতে পারেন দু-একটা পাথর।
গোলাপি রঙের সাজেওচোখ সাজিয়ে তুলতে পারেন। গোলাপি রঙের গাঢ়, হালকা—দুটি শেডই বেছে নিন। এর সঙ্গে বেগুনি শ্যাডো যোগ করে নীল-লাইনার টেনে নিতে পারেন চোখে। নখে লাগিয়ে নিন বেগুনি রঙের নকশাদার স্ট্যাম্প। গোলাপি যেকোনো পোশাকের সঙ্গে মানিয়ে যাবে এ সাজ।
গোলাপি রঙের মতো এ বয়সে লাল রঙের পোশাকের প্রতিও সবার ঝোঁক থাকে। লাল পোশাকে চোখ সাজিয়ে তুলুন বাদামি, কালচে ধোঁয়াশা করে। আর নখে ফ্রেঞ্চ মেনিকিউর করে লাল নেইলপলিশ ও পাথরের ব্যবহার করতে পারেন। রাতের যেকোনো অনুষ্ঠানের জন্য একেবারে যথাযথ হবে এ সাজ।
ছুটির দিনে বন্ধুদের সঙ্গে টইটই করে ঘুরতে যাওয়া হবে? এবার তবে পুরো রংধনুটাই তুলে নিন চোখে। গোলাপি, হলুদ, সবুজ থেকে একটু একটু নিয়ে লাগিয়ে নিন। তার সঙ্গে খুলে দিন চুল। সাদা রঙের পোশাকে চমৎকার মানিয়ে যাবে এ সাজ।
সুন্দর সাজের ক্ষেত্রে সঠিক সাজের উপাদানের ভূমিকাও কম নয়।
আই-লাইনারটা হতে হবে জেল আই-লাইনার। এতে ছড়িয়ে যাওয়ার ভয় বা আশঙ্কা থাকবে না। ঠোঁটের জন্য হালকা রঙের লিপগ্লসই যথেষ্ট। তবে লিপগ্লস ব্যবহারের আগে ঠোঁটে লিপবাম লাগিয়ে নিতে হবে। আইশ্যাডো হিসেবে নিয়ন রঙের এসিড প্যালেট কিংবা আলাদা আইশ্যাডো বক্স ও আইপেনও বেছে নিতে পারেন। নখের নকশা করার জন্য স্ট্যাম্প কিনে নিতে পারেন, আবার নিজের মনের মাধুরী মিশিয়ে এঁকেও নিতে পারেন। নখ ছোট হলে আলাদা নকশা করা নখও বেছে নিতে পারেন। যাঁরা চোখের পাপড়ি ব্যবহার করতে চান, তাঁরা অবশ্যই আপনার চোখের পাপড়ির সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে সেটিকে আকৃতি দিয়ে নিতে ভুল করবেন না। সাজ বাক্সে আরও একটি গুরুত্বপূর্ণ উপাদানের সর্বদা উপস্থিতি থাকে, সেটি হলো মেকআপ রিমুভার। সুন্দর হওয়ার জন্য সেজে ওঠাটা যেমন জরুরি, সুন্দর থাকার জন্য সঠিকভাবে সাজ উপাদান তুলে ত্বককে বিশ্রাম দেওয়াও জরুরি। সব প্রস্তুতি যদি ঠিক থাকে, তবে দেরি কেন? সাহস করে আজই মেতে উঠুন সাজের রঙিন খেলার উৎসবে।

ঘুমের আগে ত্বকের যত্নে

শীত চলে এলে ত্বকের যে বিশেষ যত্ন দরকার তা আমাদের সবারই জানা। তবে অনেকেই হয়তো জানেন না কখন নেবেন ত্বকের যত্ন। সকালে ঘুম থেকে উঠে বা দুপুরে গোসলের পর তো বটেই, রাতে ঘুমোতে যাওয়ার আগেও ত্বকের দরকার বিশেষ পরিচর্যা। 

 ঘর থেকে আমাদের তো বাইরে যেতেই হয়। আর শীতে যেহেতু ধুলাবালি বেড়ে যায়, তাই সারা দিনের ক্লান্তি শেষে ত্বকের দরকার একটু বিশেষ যত্ন।
শীতের রাত দীর্ঘ সময়ের; তাই রাতে ঘুমোতে যাওয়ার আগে ত্বকের ধরন অনুযায়ী ফেসওয়াশ বা কোমল সাবান দিয়ে মুখটা ধুয়ে ফেলতে হবে। এরপর যাঁদের ত্বক কিছুটা শুষ্ক, তাঁরা তৈলাক্ত ক্রিম লাগাতে পারেন। আর যাঁদের ত্বক এমনিতেই তৈলাক্ত তাঁরা ময়েশ্চারাইজিং ক্রিম দিতে পারেন। সংবেদনশীল ত্বক যাঁদের, অর্থাৎ ত্বকে ক্রিম দিলে র‌্যাশ ওঠার মতো সমস্যা রয়েছে, তাঁদের জন্য শিশুদের উপযোগী ক্রিম.
শীতের শুরুতেই শুষ্কতার আবেশ টের পায় নাজুক ঠোঁট। ঠোঁট ফাটা বা চামড়া ওঠার সমস্যা তো আছেই। তাই রাতে ঘুমোতে যাওয়ার আগে ঠোঁটে ভ্যাসলিন বা চ্যাপস্টিক দিতে পারেন। তবে যাঁদের ঠোঁটের ত্বকে অ্যালার্জির সমস্যা আছে, তাঁরা ঠোঁটের ত্বকের ধরন বুঝে লিপবাম ব্যবহার করতে পারেন।
রাতে ঘুমোতে যাওয়ার আগে হাত, পা শাওয়ার জেল কিংবা সাবান দিয়ে পরিষ্কার করে ধুয়ে ফেলতে হবে। পায়ের গোড়ালির মৃত কোষ তুলতে কিছুক্ষণ পা হালকা গরম পানিতে ভিজিয়ে রেখে ঝামা দিয়ে ঘষতে হবে। কেননা, সারা দিনের চাপ তো পায়ের ওপর বেশি পড়ে। হাত-পা পরিষ্কারের পর ময়েশ্চারাইজিং লোশন লাগাতে হবে।
যাঁদের পা ফাটা সমস্যা আছে, তাঁরা ঘুমোতে যাওয়ার আগে একটু পুরু করে পায়ে ভ্যাসলিন লাগিয়ে সুতির মোজা পরতে পারেন। এতে পা নরম থাকে এবং পা ফাটা প্রতিরোধে বেশ কাজ দেয়। অনেকের আঙুলের ওপরের অংশ ফাটে, এ ক্ষেত্রে আঙুলের কোনার জায়গা পরিষ্কার করে ভ্যাসলিন লাগাতে হবে। সম্ভব হলে সারা শরীর ভেজা কাপড় দিয়ে মুছে ময়েশ্চারাইজিং লোশন লাগিয়ে নিতে পারেন।
আর যাঁদের হাত ঘামে তাঁরা হাতে লোশন লাগিয়ে হালকা করে পানি দিয়ে ধুয়ে ফেলতে পারেন। তাতে হাত কম ঘামবে এবং লোশনের নরম ভাবটা ত্বকে থেকেই যাবে। শীতের সময় সিনথেটিকজাতীয় কাপড় পরে ঘুমোলে শরীর গরম হয় না, তাই মোটা সুতির কাপড় পরে ঘুমোতে যাওয়া উচিত। সুতির ফুল হাতার গাউন বা ম্যাক্সি পরলে হাত-পায়ের ত্বক সুরক্ষিত থাকবে।

উঁচু হিলে বিপত্তি (High Heel Shoe)

উঁচু হিলের জুতা। উচ্চতা বাড়াল, হাঁটার ধরন হয়ে উঠল আকর্ষণীয়। পা দুখানাও দেখাচ্ছে চমৎকার। কিন্তু হিল খোলার পরে? পায়ের ব্যথায় হয়তো দুদিন হাঁটতেই পারলেন না। তাই বলে বিশেষ অনুষ্ঠানে হিল না পরেও তো কোনো উপায় নেই। তাই হিল পরা কীভাবে নিরাপদ করবেন, তা নিয়েই এই আয়োজন।  চলনে ও ব্যক্তিত্ব আলাদা সৌন্দর্য যোগ করে পোশাকের সঙ্গে ম্যাচ করা হিল। তিন ধরনের হিল দেখা যায়। চোখা গোড়ার হিল, পেনসিল হিল এবং সামনে-পেছনে সমান উঁচু ফ্ল্যাট হিল। আজকাল প্রায় সব তরুণী যেকোনো পোশাকের সঙ্গে হিল পরছেন।

চাই মানানসই হিল
হিল জুতা অবশ্যই ড্রেসকোডের সঙ্গে মিলিয়ে পরতে হবে। সালোয়ার-কামিজের চেয়ে শাড়ি, ফতুয়া, জিনস কিংবা চাপা সালোয়ারের খাটো কামিজের সঙ্গে হিল বেশ মানানসই। পোশাকের রংও এ ক্ষেত্রে বেশ গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। পুরোপুরি সাদা পোশাকের সঙ্গে শুধু লাল জুতা মানায় না। সে ক্ষেত্রে পোশাকের অন্যান্য অনুষঙ্গ যেমন—ব্যাগ, ঘড়ি, চুড়ি অথবা রোদচশমা জুতার সঙ্গে মিলিয়ে নিতে পারেন।
হিলে ফুটে ওঠা চাই আপনার রুচি এবং ব্যক্তিত্বের মিশেল। অনেকেই ফিতাওয়ালা কিংবা অতিরিক্ত কারুকাজ করা রং-বেরঙের হিল পছন্দ করেন। পশ্চিমা ধাঁচের সঙ্গে ও ধরনের হিল মানায়ও ভালো। আবার একরঙা জুতাও ভালো লাগে।

হিল পরার প্রস্তুতি
হিল পরার মূল উদ্দেশ্যই হলো পা সুন্দর দেখানো।  সে ক্ষেত্রে পায়ের যত্ন নিতে হবে সবার আগে। পায়ের ত্বকের রং যেমনই হোক, পা পরিষ্কার থাকা চাই। নখের ভাঁজে ধুলা-ময়লা থাকা যাবে না। নখে নেইলপলিশ লাগাতে পারেন। অথবা শুধু বাফারিং বা শাইনিং লুক নিয়ে আসতে পারেন সাদা নখে। পায়ের জুয়েলারি যেমন নূপুর, রিং বা অ্যাঙ্কলেট হিলের সঙ্গে দারুণ মানিয়ে যাবে। সবচেয়ে জরুরি হলো, গোড়ালি সুন্দর রাখা। অবশ্যই গোড়ালিতে কোনো ফাটা বা রুক্ষভাব থাকা যাবে না। সে ক্ষেত্রে পেডিকিউর করাতে পারেন। হিল জুতা একটু দামি হওয়াই ভালো। কারণ, ফ্যাশনগুরুরা সব সময় বলেন, আপনার ব্যক্তিত্ব ও রুচি দুটোই বোঝা যায় পায়ের জুতা দেখে।

উঁচু হিলের সমস্যা
মানবশরীরে পায়ের গঠন খুবই গুরুত্বপূর্ণ এবং আকর্ষণীয়। পা পুরো শরীরের ভারসাম্য রক্ষা করে। সেই ভারসাম্য খুব সহজেই নষ্ট হয়ে যায় উঁচু হিলের কারণে। নিয়মিত উঁচু হিল পরলে মেরুদণ্ডের হাড় সরে যায়। স্নায়ুচাপ তৈরি হয়। শরীরের কিছু অংশ পুরোপুরি অচল ও অবশ হয়ে যায়। গোড়ালির মূল রগ ছোট হয়ে যায়।
উঁচু হিলের কারণে গোড়ালিতে চাপ পড়ে। এ কারণে ঘাড় ও পিঠে স্থায়ী ক্ষতি হয়ে যেতে পারে। গোড়ালির স্নায়ু ও ত্বক হলদেটে হয়ে শক্ত হয়ে পড়ে। আঙুলের নিচের কোমল অংশে ক্ষত তৈরি হয়। সব সময় হাই হিল পরার অভ্যাস হাঁটুতে বাত ও বার্ধক্যজনিত নানা উপসর্গ ত্বরান্বিত করে। এ অভ্যাস আপনার পায়ের আঙুল চিরস্থায়ীভাবে সংকুচিত ও বিকৃত করে দিতে পারে।

 কিছু পরামর্শ—

 হাই হিল যেন আরামদায়ক হয়। না বেশি চাপা, না বেশি ঢিলা। তাই মোটা উলের মোজা পরা পায়ের মাপে হিল জুতা কিনুন। যাঁদের ওজন বেশি, তাঁদের উঁচু হিল না পরাই ভালো।
 উঁচু হিল পা ও পুরো শরীরের রক্ত সঞ্চালন বাধাগ্রস্ত করে। তাই অতিরিক্ত সেদ্ধ খাবার খাওয়া বাদ দিন।
 সঠিকভাবে হাঁটার অভ্যাস করুন। ব্যায়াম করুন।
 প্রতিদিন যোগব্যায়াম করলে উঁচু হিলজনিত সমস্যার অনেকখানি উপশম হয়।
 উঁচু হিল পরে উঁচু-নিচু জায়গায় হাঁটবেন না।
 গর্ভাবস্থায় ও মাসিকের সময় কখনোই উঁচু হিল পরবেন না।
 উঁচু হিলের সঙ্গে ত্বকের রঙের মোজা পরলে পায়ে দাগ কম পড়বে। ত্বকও ভালো থাকবে।
 নতুন নতুন হিল জুতা পরলে হাঁটার সময় সর্বোচ্চ সতর্কতা অবলম্বন করুন। ধীরে হাঁটুন।
 গোড়ালি মচকে গেলে বা পায়ে বেশি ব্যথা করলে দেরি না করে চিকিৎসকের পরামর্শ নিন।

শীতের প্রসাধনী

ষড়্ঋতুর এ দেশে ঋতুর পালাবদলে শীতের আগমনটা চোখে আঁচ করতে পারুন আর না-ই পারুন, আপনার টানটান ত্বক নিশ্চয়ই তা অনুভব করতে পেরেছে!
প্রকৃতির এ রুক্ষতায় ত্বক আর চুল নিয়ে কাবু হওয়ার কিছু নেই। আবহাওয়া-উপযোগী প্রসাধনী নির্বাচন আর একটু বাড়তি পরিচর্যাই হতে পারে এর সহজ সমাধান।
‘ধুলা আর আর্দ্রতাহীনতা তো আছেই। পাশাপাশি শীতের মিঠে রোদটাও ক্ষতিকর প্রভাব ফেলে আমাদের ত্বকে ও চুলে। তাই এ সময়ের প্রসাধনী বাছাই করতে হবে এই দিকগুলো মাথায় রেখে।’ এভাবেই বলেন, ম্যাজিক মিরর মেকওভার লাউঞ্জের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা ফারজানা হালিম হাই। তাঁর পরামর্শ হলো, শীতে ত্বকের আর্দ্রতা ধরে রাখতে তেলযুক্ত ময়েশ্চারাইজার বেছে নিন।
সাধারণত আমরা বছরের অন্যান্য সময়ে পানিযুক্ত যে ময়েশ্চারাইজার ব্যবহার করি, তা শীতে কাজ দেয় না। যাঁদের ত্বক বেশি শুষ্ক তাঁরা পেট্রোলিয়াম জেলিও ব্যবহার করতে পারেন। যাঁরা মুখমণ্ডলে ক্রিম ব্যবহার করেন, তাঁদের ক্রিম নির্বাচনের ক্ষেত্রেও একই কথা প্রযোজ্য। যাঁদের ঘরের বাইরে বেরোতে হয়, তাঁরা অবশ্যই সানস্কিন ব্যবহার করুন। আপনি কত সময় ঘরের বাইরে অবস্থান করবেন তার ওপর নির্ভর করে আপনার সানস্কিন বেছে নিন। বাংলাদেশে সাধারণত এসপিএফ-১৫ থেকে এসপিএফ-৪৫ পর্যন্ত সানস্কিন পাওয়া যায়। যাঁরা কেবল ঘণ্টাখানেক সময়ের জন্য বাইরে বেরোবেন, তাঁদের জন্য এসপিএফ-১৫-ই যথেষ্ট। যাঁরা সারা দিনের জন্য বের হবেন, তাঁরা অবশ্যই এসপিএফ-৪৫ সমৃদ্ধ সানস্কিন বেছে নিন। ঠোঁটের হাসিতে সজীবতা ধরে রাখতে ব্যবহার করুন লিপবাম। বাইরে বের হওয়ার আগে এসপিএফ-১৫ সমৃদ্ধ লিপবাম বেছে নিন। শীতে চুলও বিবর্ণ হয়ে পড়ে। অনেকেই খুশকির সমস্যায়ও ভুগে থাকেন। তাঁরা অবশ্যই অ্যান্টি ড্যানড্রাফ (খুশকি প্রতিরোধক) শ্যাম্পু ব্যবহার করুন। রোদের প্রখরতা থেকে চুলকে খানিকটা বাঁচাতে পারেন সান প্রটেকশন (সূর্যরশ্মি প্রতিরোধক) জেল বা ক্রিম ব্যবহার করে। তবে রঙিন স্কার্ফখানি তার চেয়ে বেশি কাজ দেবে আপনাকে, বেশ ফ্যাশনেবলও দেখাবে। আমাদের দেশে শীতে যেন উত্সবের ধুম লেগে যায়। সে উত্সবের রঙে সেজে উঠতে বাধা নেই। তবে সজীব আর সতেজ সাজের প্রসাধনও হতে হবে আবহাওয়া উপযোগী। শীতের মেকআপের বেইজ হিসেবে বেছে নিন তেলযুক্ত তরল মেকআপ। এ সময় পাউডারযুক্ত প্রসাধন কম ব্যবহার করাই ভালো। তবে যাঁদের ত্বক অধিকমাত্রায় তৈলাক্ত, তাঁরা ময়েশ্চারাইজার লাগিয়ে তার ওপর পাউডার ব্যবহার করতে পারেন। তরল আইশ্যাডো বেছে নেওয়াই বুদ্ধিমানের কাজ। কারণ, অনেকেরই চোখের পাপড়ি রুক্ষ হয়ে ওঠে শীতে। কখনো কখনো হালকা খুশকির প্রাদুর্ভাবও দেখা যায়। তাই পাউডার বা শক্ত স্টিকের আইশ্যাডো ব্যবহার না করাই ভালো। এ সময় বেছে নিন ক্রিমি ব্লাশন। বাজারে লিপস্টিকের মতো একধরনের ব্লাশন খুঁজে পাবেন, এটি লাগিয়ে হাত দিয়ে একটু আলতো ঘষে নিলেই হয়। ঠোঁট সাজাতে ম্যাট লিপস্টিকের চেয়ে লিপগ্লসটাই বেশি উপযোগী। শীতে তো আর ঘেমে কাজল লেপ্টে যাওয়ার ভয় নেই, তাই আপনার পোশাকের সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে নীল, বেগুনি, সবুজ—যেকোনো কাজলে রাঙিয়ে তুলতে পারেন চোখ।
প্রসাধন ব্যবহারের পর প্রসাধন সঠিকভাবে তুলে ফেলাও জরুরি। বাজার থেকে প্রসাধন তুলে ফেলার সহজ উপকরণ হিসেবে রিমুভিং লোশন কিনে নিতে পারেন। যাঁদের সারা দিনের কর্মপরিকল্পনা নিয়ে প্রতিদিন ঘরের বাইরে বেরোতে হয়, তাঁরা ব্যাগের কোণে একটি ছোট প্রসাধন ব্যাগ সার্বক্ষণিক সঙ্গী করে নিতে পারেন। একটা লিপগ্লস, সানস্ক্রিন লোশন, লিকুইড ফাউন্ডেশন আর একটা ফেসওয়াশ, একটু রঙিন কাজল—এই তো আপনার ভ্রাম্যমাণ ছোট্ট প্রসাধন ঘর।
তবে একটি কথা ভুলে যাবেন না। প্রসাধন যেমন আপনাকে সজীব, সতেজ করে সাজিয়ে তুলতে পারে, তেমনি ভুল প্রসাধন নির্বাচন এবং এর অতিরিক্ত প্রয়োগ আপনার স্বাভাবিক সৌন্দর্যকে কেড়েও নিতে পারে। তাই প্রসাধন কেনার সময় অবশ্যই ভালোমানের পণ্য বেছে নিন এবং ব্যবহারের আগে এর ব্যবহার-নির্দেশিকা ও ব্যবহারের সময়সীমা দেখে নিন। প্রসাধন সরাসরি মুখমণ্ডলে ব্যবহার না করে প্রথমে হাতের অল্প একটু অংশে ব্যবহার করে দেখুন, সেটি আপনার ত্বকে সহায়ক কি না। এরপর তা ত্বকে ব্যবহার করুন।
প্রসাধনের পাশাপশি প্রাকৃতিক উপাদানেও এ সময় নিজের ত্বক ও চুলের যত্ন নিতে পারেন। এ ধরনের পরিচর্যার নানা উপায় বলে দিয়েছেন রূপবিশেষজ্ঞ রাহিমা সুলতানা।
 আমলকীর রস ও এক চামচ তিলের তেল একসঙ্গে জ্বাল দিয়ে ঠান্ডা করে তার সঙ্গে মধু মিশিয়ে ত্বকে ও চুলে লাগাতে পারেন প্রতিদিন একবার। যাঁদের ত্বক তৈলাক্ত, তাঁরা তিলের তেল বাদ দিন।
 যাঁদের চুল পড়েছে তাঁরা টকদই, ডিম ও আমলকীর রস চুলে লাগিয়ে ২০ মিনিট পর ধুয়ে ফেলুন।
 চোখের নিচের কালো দাগ ও পাপড়ির খুশকির জন্য পাকা টমেটোর রস ও মধু একত্রে মিশিয়ে লাগাতে পারেন।
 নারকেল বা জলপাই তেল, গ্লিসারিন, গোলাপজল একসঙ্গে মিশিয়ে ময়েশ্চারাইজার হিসেবে ব্যবহার করতে পারেন।
 যাঁদের হাত-পা ফাটে, তাঁরা তিলের তেল, গ্লিসারিন ও গোলাপজল একসঙ্গে মিশিয়ে প্রতিদিন একবার ম্যাসাজ করুন।

ধরন বুঝে ত্বকের যত্ন

ত্বকের যত্নে প্রাকৃতিক পদ্ধতি ব্যবহারই সর্বোত্তম, যদি তা করা হয় ত্বকের ধরন বুঝে।

আপনার ত্বকের ধরন কেমন
ত্বকের প্রাকৃতিক যত্নের প্রথম ধাপ ত্বকের ধরন বোঝা। ত্বক পাঁচ ধরনের। শুষ্ক, তৈলাক্ত, স্বাভাবিক, মিশ্র ও স্পর্শকাতর (সেনসেটিভ)। পাতলা টিস্যুর সাহায্যে সহজেই ত্বকের ধরন বুঝতে পারেন। সকালে ঘুম ভাঙার পর মুখ ধোয়ার আগে কপাল, নাকের ভাঁজ, চিবুক, গালে আলতো করে টিস্যুর চাপ দিন। ত্বক তৈলাক্ত হলে মুখের প্রতিটি অংশ থেকেই টিস্যুতে তেলের ছোপ পড়বে। এ ধরনের ত্বকে প্রায়ই ব্রণ হতে দেখা যায়। যদি কপাল, নাকের ভাঁজ, চিবুকে তেল পান, বুঝবেন আপনার ত্বক স্বাভাবিক। শুধু নাকে ও চিবুকে তেল থাকলে ত্বকের ধরন হবে মিশ্র। শুষ্ক ত্বকে তেল তো থাকেই না, বরং খরখরে হয়ে যায়; ফেটে লাল দেখায়। স্পর্শকাতর ত্বক খুব পাতলা হয়, অতিরিক্ত ফরসা হয়, ক্ষেত্র বিশেষে নীল শিরা দেখা যায়। এ ত্বকের জন্য সব ঋতুতেই চাই অতিরিক্ত যত্ন।

প্রাকৃতিক পরিষ্কারক
প্রতিদিনের শেষে এবং ফেসপ্যাক ব্যবহারের আগে মুখ পরিষ্কার (ক্লেনজিং) করা চাই। রাহিমা সুলতানার পরামর্শ হলো, তৈলাক্ত ত্বকের পরিষ্কারক হবে শসার রস, স্বাভাবিক ও মিশ্র ত্বকের জন্য গাজরের রসে দু-এক ফোঁটা লেবুর রস, শুষ্ক ত্বকে দুধ ও মধুর মিশ্রণ, আর স্পর্শকাতর ত্বকের জন্য দুধ, মধু ও শসার রসের মিশ্রণ। এ তরল মিশ্রণগুলো কাচের পাত্রে করে ফ্রিজে সংরক্ষণ করা যাবে। তুলার সাহায্যে মুখে লাগাতে হবে। শুকিয়ে এলে কুসুম গরম পানিতে ধুয়ে ফেলতে হবে।

প্রাকৃতিক ফেসপ্যাক
রাহিমা সুলতানা বলেন, সপ্তাহে অন্তত এক দিন ত্বকের যত্নে প্রাকৃতিক ফেসপ্যাক ব্যবহার করা উচিত। আর ফেসপ্যাকটি অবশ্যই হবে ত্বকের ধরন অনুযায়ী। তৈলাক্ত ত্বকের ফেসপ্যাকের জন্য নেবেন মুলতানি মাটি অথবা মটর ডালের বেসন এক টেবিল চামচ, শসার রস এক টেবিল চামচ, মধু আধা চা-চামচ, লেবুর রস আধা চা-চামচ। শুষ্ক ত্বকের মিশ্রণটি হবে আধা চা-চামচ মধু, একটি ডিমের হলুদ কুসুম, হালকা চন্দন গুঁড়া এবং আধা চা-চামচ অলিভ অয়েলের। ডিমে অ্যালার্জি থাকলে শুষ্ক ত্বকের আরেকটি মিশ্রণ হবে দুই টেবিল চামচ বাঁধাকপির রস, এক চা-চামচ মধু ও এক চা-চামচ ডালের বেসনের। যাঁদের ত্বক স্বাভাবিক, তাঁরা আধা চা-চামচ দুধের সর, আধা চা-চামচ মধু, এক চা-চামচ কাঁচা হলুদের রস, এক টেবিল চামচ ময়দার ফেসপ্যাক ব্যবহার করলে মুখে আলাদা চমক আসবে। যাঁদের ত্বক মিশ্র, তাঁদের মিশ্রণটি হবে মসুর ডালের বেসন দুই চা-চামচ, গাজর পেস্ট এক টেবিল চামচ এবং আধা চা-চামচ মধুর। স্পর্শকাতর ত্বকের মিশ্রণে থাকবে এক টেবিল চামচ সয়া পাউডার, আধা চা-চামচ কাঠবাদামের পেস্ট, আধা চা-চামচ মধু ও এক টেবিল চামচ দুধ। ফেসপ্যাকের মাস্ক অন্তত আধা ঘণ্টা মুখে মাখিয়ে রাখতে হবে। হালকা গরম পানিতে মুখ পরিষ্কার করে অবশ্যই ময়েশ্চারাইজার লাগাতে হবে।

সবশেষে
সুন্দর থাকতে সুস্থতার কোনো বিকল্প নেই। নিয়মিত ব্যায়াম, পানি, শাকসবজির স্যুপ ত্বক ভালো রাখে ও ওজন কমায়। প্রতিদিনের খাবারে রংধনু ডায়েট অর্থাত্ হলুদ, সাদা, সবুজ, কমলা, বেগুনি ও লাল রঙের শাকসবজি ও ফলমূল আপনাকে সব সময় সুন্দর রাখবে। কারণ, সৌন্দর্য আসে ভেতর থেকে।

পরিষ্কার চুল, সুন্দর চুল

চুল সুন্দর, ঝলমলে ও মোলায়েম রাখতে সারা বছর চলে কতই না যত্ন-আত্তি। কিন্তু গোলটা বাধে শীতে এসে। রুক্ষ আবহাওয়ায় সেই চুলের সৌন্দর্য মাটি হওয়ার দশা। শুষ্কতার প্রভাব থেকে বাঁচিয়ে চুল ভালো রাখতে শীতে তাই চাই আলাদা যত্ন।মাথার তালু আর চুলে ধুলাবালি লাগলে তা ঝরে না গিয়ে আটকে থাকে। ফলে চুল আঠালো ও চটচটে হয়ে পড়ে, খুশকিও দেখা দেয়। তাঁর মতে, শীতে চুলের সব সমস্যা থেকে রক্ষা পাওয়ার মূলমন্ত্র হলো নিয়মিত চুল পরিষ্কার করা। এমনকি, গোসল প্রতিদিন করা সম্ভব না হলেও চুল ও মাথার তালু প্রতিদিনই আসলে শ্যাম্পু করে পরিষ্কার রাখা উচিত।
খুব সহজ ও মৌলিক কিছু উপায়ে শীতে চুল ভালো রাখা সম্ভব। চুল পরিষ্কার বিষয়ে আফরোজা জানান, তৈলাক্ত চুল হলে সপ্তাহে দুই দিন আর স্বাভাবিক ও শুষ্ক চুলে রোজই কন্ডিশনার ব্যবহার করা উচিত শ্যাম্পুর পর। হট অয়েল ম্যাসাজ চুলের জন্য খুব উপকারী। চুল ও তালুতে কুসুম গরম তেল দিয়ে আধঘণ্টা পর ১০ মিনিট স্টিম নিয়ে শ্যাম্পু করে কন্ডিশনার ব্যবহার করতে হবে। হট অয়েল ম্যাসাজের ক্ষেত্রে তৈলাক্ত চুলের জন্য অলিভ অয়েল, শুষ্ক চুলে নারকেল তেল আর মিশ্র প্রকৃতির চুলে ও চুল পড়ার প্রকোপ থাকলে তিলের তেল নিন। পুরো রাঙানো বা হাইলাইটেড চুল হলে হেয়ার স্পা বা প্রোটিন ট্রিটমেন্ট করিয়ে নিতে পারেন প্রতি ১৫ দিনে অন্তত একবার। শুধু পরিষ্কারই নয়, চুলে ঔজ্জ্বল্য আনতে ও চুলের স্বাস্থ্য ভালো রাখতে নিয়মিত প্যাক ব্যবহার করুন। আপনার চুলের ধরন বুঝে ঘরে বসেই তৈরি করে নিতে পারেন চুলের প্যাক—
 তৈলাক্ত চুলের জন্য মধু, পাকা কলা, টক দইয়ের মিশ্রণ প্যাক হিসেবে ব্যবহার করুন। মধু তালুর যত্নে খুব ভালো। এ প্যাক চুলে বেশ একটা কোমল ভাব এনে দেবে।
 মিশ্র প্রকৃতির চুলের জন্য আমলা, বহেড়া, হরীতকী গুঁড়ার সঙ্গে টক দই মিশিয়ে প্যাক তৈরি করুন।
 শুষ্ক চুল ও খুশকি থাকলে সরিষার খৈল, টক দইয়ের প্যাকে খুব উপকার পাবেন।
 চুলে জেল্লা আনতে পাকা পেঁপে, পাকা কলা, মধু, টক দইয়ের প্যাক লাগান। তৈলাক্ত চুলের ক্ষেত্রে প্যাকে পাকা পেঁপে এড়িয়ে চলুন।
ধোয়া না থাকলে চুলে স্টাইল দেওয়াও দুরূহ। কোনো অনুষ্ঠানে যাওয়ার দিন নিতান্তই যদি চুল ধোয়া না থাকে, তবে ‘মুজ’ ব্যবহার করে চুলে একটা ‘ওয়েট লুক’ দিয়ে নিতে পারেন। মনে রাখতে হবে, প্রতি ১৫ দিনে অন্তত একবার তৈলাক্ত চুলে প্যাক ব্যবহার করুন। আর শুষ্ক ও মিশ্র চুলে ১০ থেকে ১৫ দিন অন্তর একবার প্যাক লাগান। পরিষ্কার চুলের সঙ্গে সঙ্গে এভাবেই সঠিক যত্নে সুন্দর চুলে পার করুন পুরো শীত।

বৃহস্পতিবার, ৯ ফেব্রুয়ারী, ২০১২

বাড়িতেই চুলের যত্ন

আজকাল স্যালনে গিয়ে চুলের যত্ন নেন অনেকে। প্রোটিন ট্রিটমেন্ট, হেয়ার স্পা ইত্যাদি নানা ধরনের যত্নের ব্যবস্থা আছে স্যালনে। তবে বাড়িতে বসেও চুলের এমন যত্ন নেওয়া সম্ভব।


‘সাধারণত যাদের ত্বক তৈলাক্ত, তাদের চুলও তৈলাক্ত হয়। আর যাদের ত্বক শুষ্ক, তাদের চুল শুষ্ক ও রুক্ষ হয়। কেবল ঋতুভেদে নয়, চুলের প্রাকৃতিক যত্ন চাই প্রতিক্ষণ।’ বললেন রাহিমা সুলতানা। তাঁর দেওয়া চুলের প্রাকৃতিক যত্নের কিছু পরামর্শে চোখ বুলিয়ে নিন ঝটপট।

বুঝে নিন চুলের ধরন
চুলের যত্নের প্রথম ধাপ চুলের ধরন বোঝা। যাদের চুল তৈলাক্ত, তাদের চুলে প্রচুর খুশকি হয়। আর যাদের চুল শুষ্ক, তাদের চুল খুব দ্রুত রুক্ষ হয়ে পড়ে। অন্যদিকে, অনেকের প্রতিটি চুলই বেশ মোটা। তবে আসল হলো রুট বা চুলের গোড়ার ধরন বোঝা। চুলের গোড়া মজবুত না হলে চুলের সৌন্দর্যের প্রায় পুরোটাই মাটি। তাই চুলের যত্নের মুখ্য উদ্দেশ্য হওয়া উচিত মাথার ত্বক ও চুলের গোড়ার যত্ন নেওয়া। বললেন রাহিমা সুলতানা।

কিছু হারবাল প্যাক
চুলের যত্নে নামীদামি প্রসাধন নয়, প্রয়োজন মনোযোগ। আর প্রাকৃতিক প্যাক তৈরিতে হাতের কাছে পাওয়া উপাদানগুলোই যথেষ্ট। বিশ্বাস হচ্ছে না? তাহলে পড়ে নিন প্যাকের বিবরণ—


চুল সুন্দর রাখতে প্রথমেই যত্ন নিন স্কাল্প বা মাথার ত্বকের। সপ্তাহে তিন দিন ছয় টেবিল-চামচ নারকেল তেল দিয়ে ২০ মিনিট ম্যাসাজ করুন। তারপর ধুয়ে ফেলুন শ্যাম্পু দিয়ে। কন্ডিশনার ব্যবহার করতে ভুলবেন না যেন।


মাথায় খুশকির উপদ্রব? নারকেল তেলের সঙ্গে মিশিয়ে নিন লেবুর রস। এক ঘণ্টা মাথায় রেখে তারপর শ্যাম্পুু করুন।


একটি কাচের শিশিতে এক টেবিল-চামচ মধু ও চার টেবিল-চামচ অলিভ অয়েল মিশিয়ে পাঁচ-ছয় ঘণ্টা রেখে দিন। ব্যবহারের আগে আরেকবার ঝাঁকিয়ে নিন। চুলে পাঁচ-দশ মিনিট ম্যাসাজ করে আঁচড়ে নিন। শাওয়ার ক্যাপ পরে র‌্যাপ করে রাখুন ২০ মিনিট। তারপর শ্যাম্পু করুন। দেখুন না, প্রাকৃতিক কন্ডিশনারের জাদু!


ক্যাস্টর অয়েল নিন চার টেবিল চামচ। মাথার তালুতে আলতো হাতে মেখে রেখে দিন ২০ মিনিট। পাতলা চুল ঘন হবে, চুল পড়াও কমবে।


একটি ডিম, এক টেবিল-চামচ নারকেল তেল মিশিয়ে ঘষে ঘষে মাখান চুলে। শাওয়ার ক্যাপ লাগিয়ে রেখে দিন আধা ঘণ্টার মতো। তারপর শ্যাম্পু করুন। এই প্যাক চুলে কন্ডিশনারের কাজ যেমন করবে, চুলকেও মজবুত করবে।

শ্যাম্পু করার পর ডিম একটি, এক কাপ টক দই, দুই টেবিল-চামচ ত্রিফলা (আমলকী, হরীতকী, বহেড়া) গুঁড়ার মিশ্রণ চুলে মেখে রেখে দিন মিনিট ত্রিশেক। এটি রং করা বা কেমিক্যাল ব্যবহার করা চুলের প্রোটিন প্যাক হিসেবে কাজ করবে।


আমলকী পেস্ট দুই টেবিল-চামচ, ডিম একটি এবং টক দই আধা কাপ মেখে প্যাক তৈরি করতে পারেন। কন্ডিশনার ও প্রোটিন প্যাক দুটোরই উপকার পাবেন।

অনেকের মাথায় কিছু অংশের চুল পাতলা হয়ে মাথার ত্বক দেখা যায়। তাঁরা আমলকী বেটে পেস্ট করে তার রস লাগাবেন প্রতিদিন। দুই সপ্তাহ লাগানোর পর ফল পাবেন।

দুই টেবিল-চামচ আমলকীর সঙ্গে দুই টেবিল-চামচ তিলের তেল ও আধা কাপ টক দই মিশিয়ে নিন। এই প্যাক ব্যবহারে শুষ্ক চুলে আসবে ঝলমলে সতেজতা।

প্রতিদিন অন্তত একটি আমলকী খাওয়ার চেষ্টা করুন। চুল পড়া কমবে।

চুলে উকুন থাকা একটি সাধারণ সমস্যা। ঘর্মাক্ত ও ভেজা চুলে উকুন দ্রুত বংশ বিস্তার করে। সে ক্ষেত্রে উকুন ধ্বংস করার ওষুধ ব্যবহার করুন। নারকেল তেলের সঙ্গে প্রতিদিন লেবুর রস মেশালেও উকুন মরে যাবে।


ফ্যানের বাতাসে চুল শুকানো ভালো। হেয়ার ড্রায়ারের ঠান্ডা বাতাসেও শুকাতে পারেন।
এ ছাড়া মনে রাখুন, চিরুনি ও ব্রাশ সব সময় আলাদা ও পরিষ্কার রাখা চাই। চুলে অনেক বেশি রাসায়নিক, রং, ড্রায়ার বা আয়রন ব্যবহার না করাই ভালো।