শুক্রবার, ১৭ ফেব্রুয়ারী, ২০১২

উঁচু হিলে বিপত্তি (High Heel Shoe)

উঁচু হিলের জুতা। উচ্চতা বাড়াল, হাঁটার ধরন হয়ে উঠল আকর্ষণীয়। পা দুখানাও দেখাচ্ছে চমৎকার। কিন্তু হিল খোলার পরে? পায়ের ব্যথায় হয়তো দুদিন হাঁটতেই পারলেন না। তাই বলে বিশেষ অনুষ্ঠানে হিল না পরেও তো কোনো উপায় নেই। তাই হিল পরা কীভাবে নিরাপদ করবেন, তা নিয়েই এই আয়োজন।  চলনে ও ব্যক্তিত্ব আলাদা সৌন্দর্য যোগ করে পোশাকের সঙ্গে ম্যাচ করা হিল। তিন ধরনের হিল দেখা যায়। চোখা গোড়ার হিল, পেনসিল হিল এবং সামনে-পেছনে সমান উঁচু ফ্ল্যাট হিল। আজকাল প্রায় সব তরুণী যেকোনো পোশাকের সঙ্গে হিল পরছেন।

চাই মানানসই হিল
হিল জুতা অবশ্যই ড্রেসকোডের সঙ্গে মিলিয়ে পরতে হবে। সালোয়ার-কামিজের চেয়ে শাড়ি, ফতুয়া, জিনস কিংবা চাপা সালোয়ারের খাটো কামিজের সঙ্গে হিল বেশ মানানসই। পোশাকের রংও এ ক্ষেত্রে বেশ গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। পুরোপুরি সাদা পোশাকের সঙ্গে শুধু লাল জুতা মানায় না। সে ক্ষেত্রে পোশাকের অন্যান্য অনুষঙ্গ যেমন—ব্যাগ, ঘড়ি, চুড়ি অথবা রোদচশমা জুতার সঙ্গে মিলিয়ে নিতে পারেন।
হিলে ফুটে ওঠা চাই আপনার রুচি এবং ব্যক্তিত্বের মিশেল। অনেকেই ফিতাওয়ালা কিংবা অতিরিক্ত কারুকাজ করা রং-বেরঙের হিল পছন্দ করেন। পশ্চিমা ধাঁচের সঙ্গে ও ধরনের হিল মানায়ও ভালো। আবার একরঙা জুতাও ভালো লাগে।

হিল পরার প্রস্তুতি
হিল পরার মূল উদ্দেশ্যই হলো পা সুন্দর দেখানো।  সে ক্ষেত্রে পায়ের যত্ন নিতে হবে সবার আগে। পায়ের ত্বকের রং যেমনই হোক, পা পরিষ্কার থাকা চাই। নখের ভাঁজে ধুলা-ময়লা থাকা যাবে না। নখে নেইলপলিশ লাগাতে পারেন। অথবা শুধু বাফারিং বা শাইনিং লুক নিয়ে আসতে পারেন সাদা নখে। পায়ের জুয়েলারি যেমন নূপুর, রিং বা অ্যাঙ্কলেট হিলের সঙ্গে দারুণ মানিয়ে যাবে। সবচেয়ে জরুরি হলো, গোড়ালি সুন্দর রাখা। অবশ্যই গোড়ালিতে কোনো ফাটা বা রুক্ষভাব থাকা যাবে না। সে ক্ষেত্রে পেডিকিউর করাতে পারেন। হিল জুতা একটু দামি হওয়াই ভালো। কারণ, ফ্যাশনগুরুরা সব সময় বলেন, আপনার ব্যক্তিত্ব ও রুচি দুটোই বোঝা যায় পায়ের জুতা দেখে।

উঁচু হিলের সমস্যা
মানবশরীরে পায়ের গঠন খুবই গুরুত্বপূর্ণ এবং আকর্ষণীয়। পা পুরো শরীরের ভারসাম্য রক্ষা করে। সেই ভারসাম্য খুব সহজেই নষ্ট হয়ে যায় উঁচু হিলের কারণে। নিয়মিত উঁচু হিল পরলে মেরুদণ্ডের হাড় সরে যায়। স্নায়ুচাপ তৈরি হয়। শরীরের কিছু অংশ পুরোপুরি অচল ও অবশ হয়ে যায়। গোড়ালির মূল রগ ছোট হয়ে যায়।
উঁচু হিলের কারণে গোড়ালিতে চাপ পড়ে। এ কারণে ঘাড় ও পিঠে স্থায়ী ক্ষতি হয়ে যেতে পারে। গোড়ালির স্নায়ু ও ত্বক হলদেটে হয়ে শক্ত হয়ে পড়ে। আঙুলের নিচের কোমল অংশে ক্ষত তৈরি হয়। সব সময় হাই হিল পরার অভ্যাস হাঁটুতে বাত ও বার্ধক্যজনিত নানা উপসর্গ ত্বরান্বিত করে। এ অভ্যাস আপনার পায়ের আঙুল চিরস্থায়ীভাবে সংকুচিত ও বিকৃত করে দিতে পারে।

 কিছু পরামর্শ—

 হাই হিল যেন আরামদায়ক হয়। না বেশি চাপা, না বেশি ঢিলা। তাই মোটা উলের মোজা পরা পায়ের মাপে হিল জুতা কিনুন। যাঁদের ওজন বেশি, তাঁদের উঁচু হিল না পরাই ভালো।
 উঁচু হিল পা ও পুরো শরীরের রক্ত সঞ্চালন বাধাগ্রস্ত করে। তাই অতিরিক্ত সেদ্ধ খাবার খাওয়া বাদ দিন।
 সঠিকভাবে হাঁটার অভ্যাস করুন। ব্যায়াম করুন।
 প্রতিদিন যোগব্যায়াম করলে উঁচু হিলজনিত সমস্যার অনেকখানি উপশম হয়।
 উঁচু হিল পরে উঁচু-নিচু জায়গায় হাঁটবেন না।
 গর্ভাবস্থায় ও মাসিকের সময় কখনোই উঁচু হিল পরবেন না।
 উঁচু হিলের সঙ্গে ত্বকের রঙের মোজা পরলে পায়ে দাগ কম পড়বে। ত্বকও ভালো থাকবে।
 নতুন নতুন হিল জুতা পরলে হাঁটার সময় সর্বোচ্চ সতর্কতা অবলম্বন করুন। ধীরে হাঁটুন।
 গোড়ালি মচকে গেলে বা পায়ে বেশি ব্যথা করলে দেরি না করে চিকিৎসকের পরামর্শ নিন।

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন