
ডায়রিয়া
এ সময় ডায়রিয়ার প্রধান কারণ হলো দূষিত পানি পান। বর্ষার জলের সঙ্গে মিশে জীবাণুগুলো ছড়িয়ে পড়ে দ্রুত। শিশুরাই বেশি আক্রান্ত হয়।
কারণ, তাদের রোগ প্রতিরোধের ক্ষমতা বড়দের তুলনায় কম। তাই ছোট-বড় সবারই পানি পানে সতর্ক হতে হবে।
কলেরা
কলেরা হয় রোটা ভাইরাসের সংক্রমণে।
কলেরায় আক্রান্ত রোগীর দেহ থেকে পানি ও লবণ বেরিয়ে যায় খুব তাড়াতাড়ি। রোগী দুর্বল হয়ে পড়ে। দ্রুত চিকিৎসা করা না গেলে রোগী কিন্তু মারাও
যেতে পারে।
টাইফয়েড
বর্ষাকালেই টাইফয়েড জ্বরের প্রকোপ বেশি থাকে। সালমোনেলা টাইফি নামের জীবাণু দ্বারা পানি ও খাবার দূষিত হয় এ সময়। সেই পানি কিংবা খাবার খেলে মানুষ টাইফয়েড জ্বরে আক্রান্ত হয়।
আক্রান্ত ব্যক্তি থেকে আবার জীবাণু ছড়িয়ে পড়ে অন্যের দেহে।
হেপাটাইটিস
হেপাটাইটিস একধরনের যকৃতের রোগ। হেপাটাইটিসের বেশ কিছু প্রকারভেদ আছে। তার মধ্যে হেপাটাইটিস-এ ও হেপাটাইটিস-ই বর্ষাকালে বেশি হয়। কারণ, এ দুটি পানিবাহিত ভাইরাস। দূষিত পানির মাধ্যমে রোগটি মানুষের দেহে ছড়ায়।
কৃমি সংক্রমণ
বর্ষাকালে কৃমি সংক্রমণের প্রাদুর্ভাব বেশি হয়ে থাকে। বর্ষার জল আর কাদামাটিতে মিশে থাকে এই জীবাণু। তাই খুব সহজেই কৃমির সংক্রমণ ঘটে এ সময়ে।
কেমন করে বর্ষার এই রোগগুলো প্রতিরোধ করা যায়—জানতে চাইলে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের মেডিসিন অনুষদের ডিন এ বি এম আবদুল্লাহ বলেন, ‘সচেতনতা বৃদ্ধির মাধ্যমে বর্ষার রোগগুলো প্রতিরোধ সম্ভব। তার পরও যদি রোগ এড়ানো না যায়, চিকিৎসকের শরণাপন্ন তো হতেই হবে। তার পরও বলব, এ সময় সতর্ক থাকাটা খুব জরুরি।’
প্রতিরোধে করণীয়
সব সময় খাওয়ার আগে ভালো করে সাবান দিয়ে হাত ধুয়ে নিতে হবে। শিশুদের দিকে বাড়তি নজর দিতে হবে এ সময়ে।
স্নান কিংবা আহার, এমনকি গৃহস্থালি জিনিসপত্র ধোয়ার ক্ষেত্রেও বিশুদ্ধ পানি ব্যবহার করুন।
বাইরে বেরে হওয়ার সময় সঙ্গে করে বিশুদ্ধ পানি নিয়ে যাওয়াই ভালো। একান্তই বাইরের পানি পান করতে হলে তা বিশুদ্ধ কি না, ভালো করে জেনে নিন।
বাড়িতে পানি ফুটিয়ে পান করার অভ্যাস করুন। একান্তই ফোটানো সম্ভব না হলে পানি বিশুদ্ধকরণ ট্যাবলেট কিংবা ফিটকিরি ব্যবহার করুন।
তাজা শাকসবজি খেতে হবে। রান্না করার আগে ভালো করে ধুয়ে নিতে হবে শাকসবজিগুলো। পচা-বাসি খবার একদমই খাওয়া যাবে না।
সাধারণত এ নিয়মগুলো মেনে চললে বর্ষার রোগবালাই কিন্তু প্রতিরোধ সম্ভব। তার পরও যদি কেউ আক্রান্ত হয়ে থাকে, একদমই সময় নষ্ট না করে চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হবে। একটুখানি সচেতনতা আর চিকিৎসকের পরামর্শ পরিবারের প্রিয় মানুষটিকে অনেক বিড়ম্বনা থেকে বাঁচিয়ে দেবে।
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন