বৃহস্পতিবার, ১৯ জুলাই, ২০১২

ডাবের পানিতে সৌন্দর্যচর্চা

সৌন্দর্য বিকশিত হয় দুভাবে—বাহ্যিক আর অভ্যন্তরীণ। বাইরে থেকে পুরো শরীরের যতই যত্ন নিন না কেন দেহের ভেতরের সব অঙ্গপ্রত্যঙ্গ সঠিকভাবে কাজ না করলে ত্বকে দেখা দেবে নানা সমস্যা। তাই সৌন্দর্যচর্চা তো করবেনই, পুষ্টিকর সব উপাদানও খাবার তালিকায় রাখতে হবে। আর প্রাকৃতিকভাবে যত বেশি সৌন্দর্যচর্চা করা যায়, ততই ভালো। কারণ, প্রাকৃতিক জিনিসগুলোর ক্ষতিকর পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া বলতে গেলে খুবই কম। সৌন্দর্যচর্চার এমনই একটি প্রাকৃতিক উপাদান হলো ডাবের পানি।

ডাবে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন ‘সি’ ও ‘এ’। এই ভিটামিন দুটো ত্বক ও চুল মজবুত করে। নখকে ভঙ্গুরতা থেকে রক্ষা করে। নখে আনে ঔজ্জ্বল্য। চোখের নিচে দাগ পড়া ও চোখের মাংসপেশির দুর্বলতা দূর করে ভিটামিন ‘এ’। অনেকেরই চোখের পাপড়িতে অ্যালার্জি থাকে। ফলে মাসকারা, আইলাইনার ব্যবহার করতে পারেন না। পাপড়িতে সাদা সাদা জমাটবাঁধা ছোট দানা বা আঠালো ভাব থাকে। ভিটামিন ‘এ’ এসব সমস্যা দূর করে। যাঁরা নিয়মিত ডাবের পানি দিয়ে মুখ ধুয়ে ফেলেন, তাঁদের এই সমস্যাগুলো হয় তুলনামূলকভাবে কম। কারণ, ডাবের পানির
বিশেষ উপাদান ত্বকের জন্য ক্ষতিকর ব্যাকটেরিয়া, ভাইরাস, ছত্রাককে ধ্বংস করতে সাহায্য করে।
ডাবের পানি দিয়ে মুখ ধোয়ার সময় চোখ বন্ধ করে মুখ ধুতে হবে, চোখ খোলা রাখা যাবে না। আর ডাবের পানিতে মুখ ধোয়ার পর মুখে হালকা আঠালো ভাব লাগে। এ জন্য মুখে ডাবের পানি দেওয়ার পাঁচ থেকে ১০ মিনিট পর স্বাভাবিক পানিতে মুখ ধুয়ে ফেলুন। যাঁদের ত্বক খুব তৈলাক্ত, তাঁরা শুধু ডাবের পানিতে মুখ ধুলে হবে না, ভালো ফেসওয়াশ দিয়ে মুখ ধুয়ে তারপর ডাবের পানি দেবেন। কারণ, তৈলাক্ত ত্বকের লোমকূপগুলোতে ময়লা জমে বেশি।
অতিরিক্ত গরম, রোদের তাপ, কর্মব্যস্ততা, মানসিক চাপের নেতিবাচক প্রভাব পড়ে ত্বক ও চুলের ওপর। চেহারায় ফুটে ওঠে বয়সের ছাপ। এ অবস্থায় ডাবের পানি আপনাকে দেবে সতেজতা। কারণ, এতে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে সোডিয়াম, ক্লোরাইড ও পটাশিয়াম, যা শরীরের পানিশূন্যতা দূর করে ক্লান্তি মুছে চেহারায় আনে উজ্জ্বল-ভাব। পুরো শরীরে সঠিকভাবে রক্ত চলাচলের জন্য ত্বক ও চুলে দেখা যায় এর ইতিবাচক প্রভাব। এতে চুল ভঙ্গুরতা থেকে রক্ষা পায়, চুলের গোড়া হয় মজবুত।
ডাবের পানিতে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন বি কমপ্লেক্স। এই ভিটামিন মানুষের স্নায়ুতন্ত্রকে রাখে শক্তিশালী। স্নায়ু বা নার্ভ কর্মতৎপর হলে ত্বক, চুল ও দাঁতের মাড়ি সুস্থ থাকে। মানুষের মাথায় রয়েছে প্রচুর পরিমাণে শিরা, উপশিরা ও স্নায়ু। শিরা-উপশিরা দিয়ে সঠিকভাবে রক্ত চললে আর স্নায়ু সতেজ থাকলে প্রতিটি চুলের গোড়া হবে মজবুত।
চুল নিয়মিত পরিষ্কার রেখে চুলের ধরন বুঝে যত্ন নিতে হবে। দেহে ভিটামিন বি কমপ্লেক্স ও সোডিয়াম ক্লোরাইডের ঘাটতি দেখা দিলে অনেকেরই ঠোঁটের চামড়া উঠে যায়। গ্রীষ্মেও শীতকালের মতো ঠোঁটের চামড়া ফেটে যায়। ঠোঁটে আসে ফ্যাকাশে সাদা ভাব। লিপজেল, লিপগ্লস বা লিপস্টিক দিলেও ঠোঁটের সাদা চামড়া উঠে আসে। কখনো বা লিপজেলের ওপর দিয়ে ফুটে ওঠে ঠোঁটের মৃত চামড়া।
এই অবস্থা থেকে পরিত্রাণের জন্য প্রচুর পরিমাণে ডাবের পানি পান করতে হবে। সপ্তাহে অন্তত দুই প্যাকেট খাওয়ার স্যালাইন খেতে হবে। আর ঠোঁটের চামড়া হাত বা নখ দিয়ে টেনে ছিঁড়বেন না। উচ্চ রক্তচাপের রোগীরা প্রেশার না মেপে ওরস্যালাইন খাবেন না। কারণ, খাওয়ার স্যালাইন দ্রুত রক্তচাপ বাড়ায়।
আয়রনও রয়েছে ডাবের পানিতে যথেষ্ট পরিমাণে। রক্ত তৈরি করার জন্য আয়রন হলো গুরুত্বপূর্ণ উপাদান। সারা শরীরে সঠিকভাবে রক্ত তৈরি হলে প্রতিটি অঙ্গ হবে বেশি শক্তিশালী, ফলে কর্মশক্তিও বাড়বে। দেহে আয়রনের পরিমাণ ঠিক থাকলে ত্বক হবে উজ্জ্বল ও মসৃণ।
ডাবের পানিতে খনিজ লবণ, ক্যালসিয়াম, ম্যাগনেশিয়াম ও ফসফরাসের উপস্থিতিও উচ্চমাত্রায়। এসব খনিজ লবণ দাঁতের ঔজ্জ্বল্য বাড়ায়। দাঁতের মাড়িকে করে মজবুত। অনেকের দাঁতের মাড়ি দিয়ে রক্ত পড়ে। মাড়ি কালচে লাল হয়ে যায়। হাসি বা কথা বলার সময় তা দেখা যায়। এ অবস্থা থেকে পরিত্রাণ দেবে খনিজ লবণ। পাশাপাশি হাড় মজবুত থাকলে হাঁটাচলাও হয় আত্মবিশ্বাসী ধরনের।
এই গরমে ছোট-বড় সবারই দেহের অভ্যন্তরীণ ও বাহ্যিক তাপমাত্রা বেড়ে যায়। এতে ত্বকে ফুটে ওঠে লালচে কালো ভাব। ডাবের পানি দেহের অভ্যন্তরীণ তাপমাত্রা কমিয়ে শরীরকে রাখে ঠান্ডা। তারুণ্য ধরে রাখতে এর অবদান অপরিহার্য। ডাবের পানি যেকোনো কোমল পানীয় থেকে অধিক পুষ্টিসমৃদ্ধ। কারণ, এটি সৌন্দর্যচর্চার প্রাকৃতিক মাধ্যম ও চর্বিবিহীন পানীয়। ডাবের পানি মিষ্টি হওয়া সত্ত্বেও ডায়াবেটিসের রোগীদের জন্য উপকারী। কারণ, এই পানি রক্ত পরিষ্কার রাখে। তবে কিডনির সমস্যায় ডাবের পানি খাওয়া থেকে বিরত থাকুন।
তবে সৌন্দর্যচর্চার জন্য শুধু ডাবের পানি পান করা বা এ পানি দিয়ে মুখ পরিষ্কার করলেই হবে না, চাই নিয়মিত পুষ্টিসমৃদ্ধ খাবার, নিয়ন্ত্রিত ওজন ও সুস্থ পরিবেশ। ভেজাল খাবারের ভিড়ে প্রাকৃতিক রূপচর্চার মাধ্যমগুলো আপনার সৌন্দর্যকে ধরে রাখবে বেশি দিন। তাই ডাবের পানিকে বলা হয় ‘ফ্লুইড অব লাইফ’ অর্থাৎ জীবনের পানীয়।

কাজলটানা চোখ

কাজল ও মাশকারা। শুধু এ দুইয়ের ব্যবহারেই চোখ সাজাতে পারেন মনের মতো করে। আরেকটু জমকালো ভাব আনতে চাইলে আইশ্যাডো তো আছেই। যুগের সঙ্গে তাল মিলিয়ে কাজল ব্যবহারেও এসেছে পরিবর্তন। এবারের নকশায় তেমন কিছু স্টাইলই তুলে ধরা হলো।

পুরোনো ধারার কাজল দেওয়ার সঙ্গে যোগ-বিয়োগ করেই নতুন অনেক স্টাইল দেখা যাচ্ছে ইদানীং। মোটা করে, ঘন করে, ইচ্ছামতো টানা টানা করে কাজল দেওয়ার ট্রেন্ড দেখা যাচ্ছে এখন। চোখের ওপরের অংশে অনেকেই টেনে লাগাতে চান না। এ ক্ষেত্রে কাজলের শেষ প্রান্তে একটু ব্লেন্ড করে দেওয়া যায়। অথবা শেষ প্রান্তটা অনেক চওড়া করে আঁকা যেতে পারে। দেখতে ভালো লাগবে। রূপবিশেষজ্ঞ ফারজানা আরমান জানান, কাজল, মাশকারা ও লাইনার চোখের সাজে খুবই গুরুত্বপূর্ণ। সুন্দর করে কাজল আর আইশ্যাডো দিলে আইশ্যাডোর দরকার হয় না। তবে পরিবেশ, পোশাক, বয়স অনুযায়ী কাজলের ব্যবহার সঠিক হতে হবে। না হলে পুরো সাজটাই বেখাপ্পা লাগবে।
কাজল দিলে চোখ দুটো দেখতে বড় লাগে। এ জন্য বড় চোখের অধিকারীরা চোখের নিচের অংশে কাজল না দিলেই ভালো। চোখের পাপড়ির কাছ দিয়ে সুন্দর করে আইলাইনার দিয়ে, মাশকারা লাগালেই হয়ে যাবে। আর ছোট চোখের জন্য নিচের দিকে কাজল লাগিয়ে ঘন করে মাশকারা লাগাতে হবে। চোখের ওপরের অংশে আইলাইনার দেওয়ার প্রয়োজন নেই।

চোখের যত্ন
কাজল ও মাশকারা হতে হবে ভালো ব্র্যান্ডের। চোখ বলে কথা। ঘুমানোর আগে অবশ্যই আই মেকআপ তুলে ফেলতে হবে। কাজল বেশিক্ষণ রাখার ফলে চোখের নিচে কালো দাগ পড়ে যায়। কারণ, এতে রাসায়নিক পদার্থ থাকে। অ্যালকোহল নেই এমন আই মেকআপ রিমুভার তুলায় লাগিয়ে চোখ পরিষ্কার করতে হবে।
ফারজানা আরমান জানান, দেশীয় পোশাকের সঙ্গে মোটা এবং ঘন করে কাজল, আইলাইনার দিলে দেখতে ভালো লাগে। কিন্তু পাশ্চাত্য পোশাকের সঙ্গে টেনে কাজল কিংবা আইলাইনার না লাগানোই ভালো। মাশকারা ঘন করে দিলেই ভালো দেখাবে। তবে কেউ যদি একান্তই দিতে চান, সে ক্ষেত্রে আইল্যাশ বরাবর কাজল দিতে পারেন। এরপর ব্রাশ দিয়ে ব্লেন্ড করে দিতে হবে। তাহলে পাপড়ির নিচে বেশ নাটকীয়ভাব চলে আসবে।

মনে রাখুন
 মাশকারা কেনার সময় বুঝে কিনতে হবে। কারও দরকার ভলিউম বেশি তৈরি করবে এমন মাশকারা। কারও আবার পাপড়িগুলো লম্বায় ছোট হয়ে থাকে। সেটার জন্যও পাওয়া যায় আলাদা মাশকারা।
 দিনের বেলায় আইলাইনার না দিলেই ভালো দেখাবে। এ সময় শুধু কাজল আর মাশকারাই যথেষ্ট। তবে যদি দিতেই চান, তাহলে জেল আইলাইনার দিতে পারেন। এটা একটা ম্যাট লুক দেবে। চকচকে ভাবটা আইজেলে আসবে না। রাতের বেলায় আইলাইনার দেওয়া যাবে।
 দিনের বেলায় পানিনিরোধক কাজল ও মাশকারা ব্যবহার করুন।
 দিনের বেলায় খুব মোটা করে কাজল না লাগানোই ভালো।’

সুস্থ থাকুন বর্ষায়

বর্ষার নবধারা জল যেমন আবর্জনা ধুয়ে দেয়, তেমনি বর্ষা অনেক রোগও বয়ে আনে। কেমন করে বর্ষা রোগ আনে? বর্ষার জল যখন জলাবদ্ধতা সৃষ্টি করে, তখন খুব সহজেই সেই পানি দূষিত হয়ে যায়। আর সেই পানির সংস্পর্শে এলে রোগবালাইও হতে পারে। তারপর আবার ভেজা আবহাওয়ায় ঘর থাকে স্যাঁতসেঁতে। এমন পরিবেশ তো রোগ-জীবাণুর জন্য খুব অনুকূল। তাই তো বাদল দিনগুলো উপভোগের পাশাপাশি সচেতনও হতে হবে। এই বর্ষার জলে যে রোগগুলো বেশি হয় তার মধ্যে ডায়রিয়া, কলেরা, টাইফয়েড, জন্ডিস উল্লেখযোগ্য। এ ছাড়া কৃমির সংক্রমণও ঘটে প্রচুর। রোগগুলো কেমন করে ছড়ায়, একটু সংক্ষেপে জেনে নিন এবার।
ডায়রিয়া
এ সময় ডায়রিয়ার প্রধান কারণ হলো দূষিত পানি পান। বর্ষার জলের সঙ্গে মিশে জীবাণুগুলো ছড়িয়ে পড়ে দ্রুত। শিশুরাই বেশি আক্রান্ত হয়।
কারণ, তাদের রোগ প্রতিরোধের ক্ষমতা বড়দের তুলনায় কম। তাই ছোট-বড় সবারই পানি পানে সতর্ক হতে হবে।
কলেরা
কলেরা হয় রোটা ভাইরাসের সংক্রমণে।
কলেরায় আক্রান্ত রোগীর দেহ থেকে পানি ও লবণ বেরিয়ে যায় খুব তাড়াতাড়ি। রোগী দুর্বল হয়ে পড়ে। দ্রুত চিকিৎসা করা না গেলে রোগী কিন্তু মারাও
যেতে পারে।
টাইফয়েড
বর্ষাকালেই টাইফয়েড জ্বরের প্রকোপ বেশি থাকে। সালমোনেলা টাইফি নামের জীবাণু দ্বারা পানি ও খাবার দূষিত হয় এ সময়। সেই পানি কিংবা খাবার খেলে মানুষ টাইফয়েড জ্বরে আক্রান্ত হয়।
আক্রান্ত ব্যক্তি থেকে আবার জীবাণু ছড়িয়ে পড়ে অন্যের দেহে।
হেপাটাইটিস
হেপাটাইটিস একধরনের যকৃতের রোগ। হেপাটাইটিসের বেশ কিছু প্রকারভেদ আছে। তার মধ্যে হেপাটাইটিস-এ ও হেপাটাইটিস-ই বর্ষাকালে বেশি হয়। কারণ, এ দুটি পানিবাহিত ভাইরাস। দূষিত পানির মাধ্যমে রোগটি মানুষের দেহে ছড়ায়।
কৃমি সংক্রমণ
বর্ষাকালে কৃমি সংক্রমণের প্রাদুর্ভাব বেশি হয়ে থাকে। বর্ষার জল আর কাদামাটিতে মিশে থাকে এই জীবাণু। তাই খুব সহজেই কৃমির সংক্রমণ ঘটে এ সময়ে।
কেমন করে বর্ষার এই রোগগুলো প্রতিরোধ করা যায়—জানতে চাইলে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের মেডিসিন অনুষদের ডিন এ বি এম আবদুল্লাহ বলেন, ‘সচেতনতা বৃদ্ধির মাধ্যমে বর্ষার রোগগুলো প্রতিরোধ সম্ভব। তার পরও যদি রোগ এড়ানো না যায়, চিকিৎসকের শরণাপন্ন তো হতেই হবে। তার পরও বলব, এ সময় সতর্ক থাকাটা খুব জরুরি।’

প্রতিরোধে করণীয়
 সব সময় খাওয়ার আগে ভালো করে সাবান দিয়ে হাত ধুয়ে নিতে হবে। শিশুদের দিকে বাড়তি নজর দিতে হবে এ সময়ে।
 স্নান কিংবা আহার, এমনকি গৃহস্থালি জিনিসপত্র ধোয়ার ক্ষেত্রেও বিশুদ্ধ পানি ব্যবহার করুন।
 বাইরে বেরে হওয়ার সময় সঙ্গে করে বিশুদ্ধ পানি নিয়ে যাওয়াই ভালো। একান্তই বাইরের পানি পান করতে হলে তা বিশুদ্ধ কি না, ভালো করে জেনে নিন।
 বাড়িতে পানি ফুটিয়ে পান করার অভ্যাস করুন। একান্তই ফোটানো সম্ভব না হলে পানি বিশুদ্ধকরণ ট্যাবলেট কিংবা ফিটকিরি ব্যবহার করুন।
 তাজা শাকসবজি খেতে হবে। রান্না করার আগে ভালো করে ধুয়ে নিতে হবে শাকসবজিগুলো। পচা-বাসি খবার একদমই খাওয়া যাবে না।
সাধারণত এ নিয়মগুলো মেনে চললে বর্ষার রোগবালাই কিন্তু প্রতিরোধ সম্ভব। তার পরও যদি কেউ আক্রান্ত হয়ে থাকে, একদমই সময় নষ্ট না করে চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হবে। একটুখানি সচেতনতা আর চিকিৎসকের পরামর্শ পরিবারের প্রিয় মানুষটিকে অনেক বিড়ম্বনা থেকে বাঁচিয়ে দেবে।

বর্ষার মেকআপ

ক্ষণে ক্ষণে রূপ বদলাচ্ছে প্রকৃতি। এই রোদ এই বৃষ্টি। সাজসজ্জার জন্য দুটোতেই বিপত্তি। গরমের ঘামে বা বৃষ্টির ছাটে মুখের প্রসাধন নষ্ট হয়ে যেতে পারে। সে কারণে এ সময়ের মেকআপের সব সামগ্রীই হতে হবে পানিরোধক। এর কোনো বিকল্প নেই।

 ‘এ ধরনের আবহাওয়ায় খুব যত্নের সঙ্গে মেকআপ করতে হবে। মুখের বেইস করার সময় খেয়াল রাখতে হবে ত্বকের ধরন। জমকালো কোনো অনুষ্ঠানের জন্য সাজতে চাইলে ফাউন্ডেশন ব্যবহার করা যেতে পারে। সে ক্ষেত্রে পাউডার ফাউন্ডেশন বা মিনারেল ফাউন্ডেশন ব্যবহার করা ঠিক নয়। শুরুতে ত্বকের রঙের সঙ্গে মিলিয়ে প্যানস্টিক মুখে ও গলায় লাগিয়ে নিন। এরপর ভালোভাবে মিশিয়ে নিতে হবে ত্বকের সঙ্গে। দীর্ঘস্থায়ী মেকআপের জন্য এর ওপরে ডাস্ট পাউডার দিয়ে নিতে হবে। এটি বাজারে কিনতে পাওয়া যায়। এই পাউডার ব্যবহারের পর ব্রাশ দিয়ে বাড়তি পাউডার ঝেড়ে ফেলতে হবে। এবার শেষ পর্যায়ে প্যানকেক ব্যবহার করলে বৃষ্টিতে বা ঘামে মেকআপ নষ্ট হবে না। এ ছাড়া কেউ যদি ত্বক চকচকে দেখাতে চায় তাহলে তরল ফাউন্ডেশন ব্যবহার করতে পারেন। এতে বৃষ্টির পানি মুখে লেগে থাকবে না। বৃষ্টিতে ভিজলেও টিস্যু দিয়ে একটু চাপ দিয়ে নিলেই পানি সরে যাবে।’


কাজল, মাশকারা ও আইলাইনার অবশ্যই পানিরোধক হতে হবে। এ সময়ের জন্য জেল কাজল বেশি ভালো। চোখের নিচের অংশে কাজল আর ওপরের অংশে আইলাইনার ভালো দেখাবে। আইশ্যাডোর ব্যবহারের আগে মনে রাখতে হবে সেটি যেন ক্রিম আইশ্যাডো হয়। পাউডার বা তরল আইশ্যাডো ব্যবহার করা উচিত নয়। তাতে বৃষ্টিতে ভিজে সমস্ত সাজই নষ্ট হয়ে যাওয়ার ভয় থাকে।
বর্ষার সময় পাউডার ব্লাশন ব্যবহার করা যেতে পারে। তবে গোলাপি, বাদামি বা পিচের মতো হালকা রংগুলো মানানসই এ সময়ের সাজে।
এবার তো ঠোঁটকেও রাঙাতে হবে। এ জন্য ম্যাট লিপস্টিকই একমাত্র ভরসা। গ্লস লিপস্টিক বা লিপগ্লস ব্যবহার করবেন না। দিনে হালকা রঙের লিপস্টিকই ভালো। রাতের জন্য গাঢ় উজ্জ্বল রঙের লিপস্টিক দিয়ে ঠোঁট রাঙাতে পারেন।
আসল কথা হলো, একটু বাড়তি যত্ন ও সর্তকতা নিয়ে এ সময়ের মেকআপ করতে হবে। পানিরোধক প্রসাধনসামগ্রী ব্যবহার করলে ঘুমানোর আগে খুব ভালোভাবে তুলে ফেলতে হবে।