সোমবার, ২৮ মে, ২০১২

রংচঙে রোদচশমা

চোখের সুস্থতা ধরে রাখতে এই গরমে চাই সানগ্লাস বা রোদচশমা। আর সেটা হালফ্যাশনের হলে তো দারুণ। সানগ্লাস দিয়েই ফুটিয়ে তোলা যায় নিজের রুচি। কীভাবে-

প্রতিদিনই সূর্যের আলোর তাপ আর অতিবেগুনি রশ্মি বাড়ছে। তাই বলে তো থেমে থাকবে না প্রতিদিনের কর্মব্যস্ত জীবন। এটাও ভুলে গেলে চলবে না, সরাসরি চোখে রোদ লাগা খারাপ। চোখে রোদ পড়লে সারাক্ষণই আমরা চোখ সংকুচিত করে তাকাই। ফলে চোখের চারপাশের নরম চামড়ায় দ্রুত ভাঁজ পড়ে, কালো দাগ হয়।
যাঁদের ত্বক স্পর্শকাতর, তাঁদের খুব সহজেই মুখের চামড়া পুড়ে যায়। রোদচশমা শুধু চোখ নয়, মুখকেও রক্ষা করে সূর্যের ক্ষতিকর রশ্মি, ধুলো ও অ্যালার্জি থেকে। রোদচশমার সঠিক রং ও আকার নির্বাচন করতে পারলেই নিজেকে সবার মধ্যে আলাদা করে ফুটিয়ে তোলা যায়। রোদচশমা হলো সেই ফ্যাশন অনুষঙ্গ, যা আপনার অতি সাধারণ পোশাকটিকেও ফ্যাশনেবল হিসেবে ফুটিয়ে তুলতে পারে।
আফরোজা কামাল আরও বলেন, রোদচশমার রং ও আকৃতি নির্বাচন করতে পারাটা খুব গুরুত্বপূর্ণ। রোদচশমা একটু বড় হওয়াই ভালো। যাঁদের মুখ একটু বড়, তাঁরা অবশ্যই বড় রোদচশমা ব্যবহার করবেন, এতে মুখ ছোট দেখাবে। যাঁদের মুখ ছোট, তাঁরা চিকন আকৃতি বেছে নেবেন।
যাঁদের ত্বকের রং গাঢ় তাঁরা কালো, কফি, গাঢ় বাদামি রঙের চশমা পরলে ভালো দেখায়। যাঁদের গায়ের রং উজ্জ্বল তাঁরা বেগুনি, সাদা, গোলাপি, লাল রং পরলে ভালো দেখায়। সানগ্লাসে নিজেকে ভালো দেখাতে চাইলে খেয়াল রাখুন চুলে। সামনে একটু ফোলানো বা টিজিং স্টাইলে রোদচশমা চমৎকার লাগে। পেছনে পনিটেল, ফ্রেঞ্চ রোল বা ফ্রেঞ্চ করে পাঞ্চ ক্লিপ দিয়ে আটকালেও ভালো লাগে। চুল কোমরের ওপরে হলে ছেড়েও রাখতে পারেন।
এই সময়ে বড় ফ্রেমের বেশ রংচঙে রোদচশমাই বেশি চলছে। বেগুনি, লাল, নীল, সবুজ ইত্যাদি রঙের রোদচশমা পরতে দেখা যাচ্ছে।
আফরোজা কামাল আরও বলেন, রোদচশমায় নিজের রুচি ও ব্যক্তিত্ব ফুটিয়ে তুলতে যা কখনো করবেন না তা হলো—
 কোনো ঘরে বা অনুষ্ঠানে প্রবেশের আগে অবশ্যই রোদচশমা খুলে রাখবেন। এটি সামাজিক ভদ্রতা।
 কখনোই রোদচশমা চোখে রেখে কথা বলবেন না, এমনকি ছোট শিশুদের সঙ্গেও নয়।
 চেষ্টা করবেন ভালো মানের চশমা পরতে।
অভিজাত বিপণিগুলোতে মিলবে ব্র্যান্ডেড রোদচশমা। ঢাকার এলিফ্যান্ট রোডে নিউ লুক চশমা বিপণির বিক্রেতা মো. জহির বললেন, দেশি-বিদেশি চশমায় আজকাল নতুন নকশা এসেছে, যা তরুণেরা খুব পছন্দ করছেন। চশমার ডাঁটায় হরেক নকশা, পাথরের কাজও করে নিচ্ছেন অনেকে। কারুকাজ আর ফ্রেম করা রোদচশমাই এখনকার ফ্যাশন।


ঢাকার ধানমন্ডি, গুলশান, উত্তরা ও বনানীর বড় শপিং মলগুলোতে মিলবে ব্র্যান্ডেড রোদচশমা। দাম পড়বে ২ হাজার থেকে ৮ হাজার টাকার মধ্যে। নিউমার্কেট, এলিফ্যান্ট রোড, কাকরাইলে পাবেন নন-ব্র্যান্ডেড রোদচশমা। দর-দামের ভিত্তিতে সেখানে দাম পড়বে ১৫০ থেকে ৪০০ টাকা।
রোদচশমায় রঙের বাহার দেখা যাচ্ছে বেশ।

মঙ্গলবার, ১৫ মে, ২০১২

গরমে কনেসাজ

বিয়ে তো দিনক্ষণ-মাস হিসাব করে হয় না। শীতকাল বিয়ের মৌসুম হলেও সারা বছর বিয়ের অনুষ্ঠান হয়ে থাকে। রোদ-গরমে বিয়ের অনুষ্ঠান হলে বাড়তি প্রস্তুতি নিতে হয়। বিয়ের পোশাক ও সাজসজ্জা করার আগে একটু কৌশলী হতে হবে। যেহেতু গরমের মধ্যে দীর্ঘ সময় এর আনুষ্ঠানিকতা চলে, ফলে আরামদায়ক পোশাক ও হালকা সাজকেই প্রাধান্য দিতে হয়। 

 ‘গরমে বউয়ের সাজ ও পোশাকে বেশি গুরুত্ব দিতে হবে। এই বিশেষ দিনের শাড়ি হিসেবে বেনারসিকেই অনেকে বেছে নিতে চান। কাতান, লাল বেনারসি শাড়ি পরলেও কেনার সময় খেয়াল রাখতে হবে যেন ভারী কাজের না হয়। লাল বেনারসি পরলে গয়না হতে পারে হালকা ধরনের। গরমে হালকা সাজের কোনো বিকল্প নেই। বেনারসির পাশাপাশি জামদানি, মসলিন, এমনকি সিল্কও পরতে পারেন। বিয়েতে এখন সাদার বেশ চল রয়েছে। চাপা সাদা, হালকা হলুদ-সবুজ-নীল, হালকা গোলাপি, মভ বা পিচ রঙের শাড়ি বেছে নিতে পারেন। এসব শাড়ির সঙ্গে মুক্তার গয়না, রুপার গয়না বেশ মানানসই। বিয়েতে সোনার গয়না তো পরবেনই, তবে শাড়ির রঙের সঙ্গে মিলিয়ে গোল্ড প্লেটেড গয়নাও ভালো দেখাবে। এটি ভিন্নমাত্রা তৈরি করে।’

সাজসজ্জা
বিয়ের জন্য শারীরিক ও মানসিক প্রস্তুতি লাগে। অন্তত ১৫ দিন আগে থেকে ভালোভাবে বডি ম্যাসাজ, স্ক্রাব বা স্পা করাতে হবে। এতে সব ধরনের ক্লান্তি দূর হবে। ভ্রু প্লাক, ফেসিয়াল ও ওয়াক্স করাতে চাইলে বিয়ের চার-পাঁচ দিন আগে করানোই ভালো। বিয়ের আগে বিউটি পারলারে গিয়ে আগাম বুকিং দিয়ে আসবেন। আপনি যাঁর কাছে সাজতে চান, আগেই তাঁর সঙ্গে কথা বলে নিন। ত্বকের ধরন, রং ও শারীরিক গড়নের ওপর ভিত্তি করে সাজটা হতে হবে। শুরুতে ভালোভাবে মুখটা পরিষ্কার করে নিন। এরপর চোখের নিচে বা মুখে কোনো দাগ থাকলে সেখানে কনসিলার লাগিয়ে ভালোভাবে মিশিয়ে নিতে হবে। এরপর ব্যবহার করুন পাউডার ফাউন্ডেশন। গরমে ক্রিম ফাউন্ডেশন ব্যবহার না করাই ভালো। এ ছাড়া কেউ চাইলে হালকা গোলাপি বা হলুদাভ ভাব আনতে প্যানকেক ব্যবহার করতে পারেন। তবে হালকা রঙের শাড়ির সঙ্গে হালকা সাজ হলেও চোখের সাজকে বেশি প্রাধান্য দিতে হবে। এ সময় গ্লিটার ব্যবহার করা ঠিক হবে না। চোখে উজ্জ্বল রঙের ব্যবহার বেড়েছে। সোনালি, ব্রোঞ্জ, সবুজ, নীলসহ যেকোনো উজ্জ্বল রং শাড়ির রঙের সঙ্গে মিলিয়ে চোখের সাজ করা যেতে পারে। চাইলে স্মোকিও করতে পারেন চোখকে। ঠোঁটে তখন হালকা গোলাপি, ন্যাচারাল রং, পিচ বা মভ রং ব্যবহার করলে আকর্ষণীয় দেখাবে। আর লাল রঙের লিপস্টিক হাল ফ্যাশনে জনপ্রিয়। এটি ব্যবহার করলে চোখের সাজ গাঢ় করবেন না। কপালে টিপ পরতে বা আঁকতে পারেন। আবার বড় টিকলি পরলে টিপ না পরলেও চলে। চুল বড় হলে ছেড়ে রাখলেও অন্য রকম সুন্দর লাগে। এ ছাড়া খোঁপা, পার্শ্বসিঁথি ও খানিকটা কোঁকড়া করে চুলটাকে নানা কায়দায় বাঁধতে পারেন। এ সময়ে বেলি ফুলের সমাহার হয়। বেণি করে বা পুরো খোঁপায় বেলি ফুল ব্যবহার করতে পারেন। লাল বা সাদা শাড়ি পরলে হাতেও পেঁচিয়ে নিতে পারেন বেলি ফুল। তবে বিয়ের আগে স্বাস্থ্যোজ্জ্বল ত্বক পেতে অবশ্যই খাওয়ার দিকে বিশেষ যত্ন দিতে হবে। পুষ্টিযুক্ত খাবার, ফল ও বেশি করে পানি খেতে হবে।

হাত-পায়ের দাগ দূর করতে


রোজকার আয়োজনে ত্বকের যত্ন বললেই ঘুরেফিরে মুখের যত্নই প্রধান হয়ে ওঠে। কিন্তু সেই সঙ্গে হাত-পায়ের যত্ন না নিলে ত্বকের রঙে দেখা যায় বৈসাদৃশ্য। অবহেলায় হাত ও পায়ে দেখা যায় কালো দাগ। 

প্রতিদিনের চলাফেরায় স্বাভাবিকভাবেই দেহে দাগ পড়ে। অতি ব্যবহার ও সারাক্ষণ কিছু না কিছুর স্পর্শের কারণে কনুই ও হাঁটুতে বেশি দাগ পড়ে। আঙুলের গিঁটে, গোড়ালিতে ও নখে কালো ছোপ পড়তে দেখা যায়। এ ক্ষেত্রে প্রাকৃতিক যত্নের কোনো বিকল্প নেই। ঘরে বসেই হাত-পায়ের কালো ছোপ দূর করতে কী করতে পারেন, তাতে চোখ বুলিয়ে নিন ঝটপট। কালো দাগ দূর করতে সপ্তাহে এক দিন স্ক্রাব ব্যবহার করতে পারেন। এ জন্য প্রয়োজন হবে এক টেবিল-চামচ করে চালের গুঁড়া, ময়দা, দুধ, শসার রস ও লেবুর রস। এর সঙ্গে মেশাবেন এক টেবিল-চামচ নারকেল তেল অথবা তিলের তেল। অলিভ অয়েলও মেশানো যায়। আর লাগবে আধা চা-চামচ মধু। ক্রিমের মতো করে মিশিয়ে দাগে ঘষবেন। তারপর ধুয়ে টোনিং করতে হবে। টোনিং করতে শুধু দুধ ও মধুর ক্রিমের মতো মিশ্রণ ব্যবহার করতে পারেন। হালকা ঘষে পানিতে ধুয়ে ময়েশ্চারাইজিং লোশন বা ক্রিম লাগাতে হবে। আরও সহজ পদ্ধতিতেও দাগ দূর করতে পারেন। এক চা-চামচ লেবুর রসে এক চা-চামচ মধু মিশিয়ে দাগে ঘষতে পারেন। সরাসরি কখনো লেবুর রস দাগে মাখবেন না। লেবুর রস ত্বকে সহ্য না হলে অ্যালোভেরা বা ঘৃতকুমারী ব্যবহার করতে পারেন। দুই টেবিল-চামচ ঘৃতকুমারীর শাঁসে এক চা-চামচ মধু মিশিয়ে দাগে মাখালেও দাগ কমবে। অনেকের নখে কালো দাগ পড়তে দেখা যায়। তারা পা ভিজিয়ে রেখে ফাইলার দিয়ে প্রথমে নখের কোনা পরিষ্কার করে নেবেন। তারপর শুধু নখে লেবুর টুকরো ঘষবেন। নখে লেবু ক্ষতি করে না। খেয়াল রাখবেন যেন চামড়ায় লেবুর রস না লাগে।
প্রতিদিন ঘরে ফিরে কুসুম গরম পানিতে লবণ ও লেবুর রস মিশিয়ে ১০ মিনিট পা ভিজিয়ে রাখতে পারেন। ফলে পা পরিষ্কার থাকবে, পায়ে কোনো দুর্গন্ধ থাকবে না।

মঙ্গলবার, ১ মে, ২০১২

গরমে চুলের যত্ন ( Nurse your Hair during Summer)

ভ্যাপসা গরম। ঘেমে নেয়ে একাকার হতে হয়। ফলে ত্বকের সঙ্গে সঙ্গে চুলেও তেলচিটচিটে ভাব চলে আসে। 

গরমে চুল কীভাবে স্বাস্থ্যোজ্জ্বল ও ঝরঝরে রাখা যায়- ‘বাড়ির বাইরে বের হলে চুলে ধুলো পড়ে। রোদ-গরমের প্রকোপ তো আছেই। ঘামের কারণে চুলের গোড়া ভিজে যায়। এ কারণে ঝরঝরে দেখায় না চুল। বিশেষ করে, যাদের তৈলাক্ত চুল, তাদের এ ধরনের পরিস্থিতিতে বেশি পড়তে হয়। তাই বলে বাইরে বের হওয়া তো আর বন্ধ থাকবে না। একটু নিয়ম মেনে চুলের নিয়মিত যত্ন নিলেই মুশকিল আসান।



‘চুল মসৃণ ও ঝরঝরে দেখাতে প্রতিদিন শ্যাম্পু ও কন্ডিশনার ব্যবহার করতে হবে। তবে তৈলাক্ত চুল হলে দুই সপ্তাহ অন্তর কন্ডিশনার ব্যবহার করা যেতে পারে। অনেকে প্রতিদিন শ্যাম্পু করেন, কিন্তু চুল ভালোমতো না শুকানোর কারণে তেলতেলে হয়ে যায়। এ কারণে চুল পরিষ্কার করার পর তোয়ালে দিয়ে ভালোভাবে মুছে ফেলতে হবে। কেউ কেউ গামছা দিয়ে চুল ঝাড়েন, এটিও ঠিক নয়। এতে চুলের গোড়া নরম হয়ে যায়। পরে চুল পড়ার সমস্যা দেখা দেয়। বাড়িতে টেবিল-ফ্যান থাকলে তাতেও চুল শুকিয়ে নিতে পারেন। চুল শুকানোর জন্য নিয়মিত বৈদ্যুতিক যন্ত্র ব্যবহার করা উচিত নয়। মাঝেমধ্যে করলেও তেল দিয়ে চুলে মালিশ করতে হবে। চুল শুকিয়ে বের হবেন। এবার কোনো ক্লিপ বা ব্যান্ড দিয়ে চুলটাকে আটকে দিন। তা না হলে গরমে চুলের গোড়া বেশি ঘামবে। অফিসে বা গন্তব্যে পৌঁছে আবার চুল খুলে দিন। ব্যাগে অবশ্যই চিরুনি রাখবেন। দিনে দুই থেকে তিনবার চুল আঁচড়াবেন। এ ছাড়া অবসর পেলেই চুলের মধ্যে হাত দিয়ে বিলি কাটবেন। এতে বাতাস ঢুকবে; ঘাম শুকিয়ে যাবে।’
চুলের কয়েকটি প্যাক
গরমে চুল ভালো রাখতে বাড়িতে বসে এই প্যাকগুলো ব্যবহার করতে পারেন। এতে ঝলমলে ও মসৃণ হবে আপনার চুল।
রুক্ষ চুলের যত্নে: টক দই, মধু ও পাকা কলা পেস্ট করে সপ্তাহে এক দিন ব্যবহার করতে পারেন।
তৈলাক্ত চুলের যত্নে: কলা ছাড়া যেকোনো মৌসুমি ফলের সঙ্গে টকদই মিশিয়ে প্যাক তৈরি করুন। আবার শুধু ফলের প্যাকও ব্যবহার করা যেতে পারে। এ ছাড়া নিয়মিত হেনাপ্যাক ব্যবহার করলে চুল ঝলমলে হয়।
আসল কথা হলো, চুল পরিষ্কার রাখতে হবে। প্রয়োজনে যেকোনো বিউটি স্যালনে গিয়ে হেয়ার স্পা, হেয়ার প্রোটিন ট্রিটমেন্ট করাতে পারেন।