সোমবার, ২৬ মার্চ, ২০১২

পায়ের যত্ন ( Leg and Feet care tips )

এই ঋতুতে মুখের ত্বকের বিশেষ যত্ন নিলেও পায়ের যত্নের কথা হয়তো অনেকেই ভুলে যান। অথচ এই ঋতুতে ধুলাবালি এবং হাঁটার কারণে পায়ের ত্বক নষ্ট হয়ে যায়। রোদের তীব্রতার কারণে পা পুড়েও যায়। তবে একটু সাবধান হলেই পা থাকবে সুরক্ষিত।

গরমের কারণে অনেকেই এ সময় ক্যাপ্রি, থ্রি কোয়ার্টার প্যান্ট কিংবা উঁচু সালোয়ার পরেন। এ কারণে পায়ের অনেকটা অংশই খোলা থাকে। তাই এই ঋতুতে প্রতিদিন পায়ের দরকার বিশেষ যত্ন। প্রতিদিন গোসলের সময় পায়ের এই যত্ন নেওয়া যায়। গোসল শেষে একটু উঁচু জায়গায় বসে পিউমিস স্টোন (পা ঘষার পাথর) দিয়ে পায়ের গোড়ালির অংশ ঘষতে হবে। তবে পায়ের চামড়ার পাতলা অংশ ঘষতে হবে ব্রাশ দিয়ে। এরপর শ্যাম্পু দিয়ে পা হালকা করে ঘষে পানি দিয়ে ধুয়ে ফেলতে হবে। ভেজা পা তোয়ালে দিয়ে মুছে লোশন কিংবা জলপাইয়ের তেল মাখতে হবে।

সপ্তাহে একবার ঘরে বসেই পেডিকিউর করা, ঘরে পেডিকিউর করতে হলে লাগবে নেইল কাটার, নেইল ফাইলার, কিউটিকল কাটার, পুশার, তোয়ালে, পেডিকিউর লবণ, পিউমিস স্টোন, ব্রাশ, শ্যাম্পু, বড় একটা গামলা ও গরম পানি। সব জিনিস একসঙ্গে নিয়ে বসতে হবে, যাতে ভেজা পা নিয়ে বারবার না উঠতে হয়।
প্রথমে নখ কেটে ফাইলার দিয়ে ফাইল করে নিতে হবে। এরপর একটা পাত্রে গরম পানি নিয়ে তার সঙ্গে পেডিকিউর লবণ অথবা খাওয়ার লবণ দিয়ে কিছুটা শ্যাম্পু মিশিয়ে ফেনা তৈরি করতে হবে। সেই পানিতে পা কিছু সময় ভিজিয়ে রেখে ঘষতে হবে। কিউটিক্যাল কাটার দিয়ে নখের চার পাশের কিউটিক্যাল কাটতে হবে। নখের ওপরের অংশ ঘষে পরিষ্কার করতে হবে। এরপর পানি দিয়ে ধুয়ে ফেলতে হবে। তোয়ালে দিয়ে পা মুছে পছন্দ অনুযায়ী নেইলপলিশ লাগাতে পারেন। পা নরম রাখতে লোশন কিংবা জলপাইয়ের তেল মাখতে হবে। সে ক্ষেত্রে পায়ের তালু থেকে প্রতিটি আঙুলের কোনায় কোনায় ম্যাসাজ করতে হবে।
বাইরে বের হওয়ার সময় মুখের মতো পায়েও সানস্ক্রিন লোশন ব্যবহার করতে হবে। 

গরমে গোলাপি মেকআপ

বৈশাখ আসতে এখনো বাকি। কিন্তু গরমের আঁচ এখনই পাওয়া যাচ্ছে। পরিবর্তন চলে এসেছে সাজসজ্জায় এবং মেকআপে। চড়া মেকআপ নয়, বরং গরমে হালকা মেকআপই ভালো। হালকা গোলাপি আভায় রাঙিয়ে নিতে পারেন আপনার গ্রীষ্মের লুক। শুধু দেখতেই ভালো লাগবে না, মনেও এনে দেবে স্নিগ্ধতা।

গরমের সময়টায় দিনের বেলায় হালকা গোলাপি এবং রাতের বেলায় গাঢ় গোলাপি টোনে সাজে ভিন্নতা আনা যায় সহজেই। তবে গোলাপি মেকআপ টোনের সঙ্গে ঐতিহ্যবাহী নয় বরং আধুনিক লুক আনতে হবে। 

গোলাপি ব্লাশঅন, লিপস্টিক দিয়ে সাজিয়ে নিতে পারেন মুখটা। আর এ ক্ষেত্রে চোখে অন্য কোনো রং না দিয়ে হালকা গোলাপি শ্যাডোই ব্যবহার করুন। তবে সেটা যেন খুব হালকা হয়। চোখের ওপর আইলাইনার টেনে নিতে পারেন। আর মাসকারা তো দেবেনই।
এ মেকআপটি করার সময় টুকটাক কিছু বিষয় খেয়াল রাখুন:
 হালকা ও গাঢ় গোলাপি মেকআপের সঙ্গে মিলিয়ে গয়না পরতে হবে। হালকা টোনের সঙ্গে মুক্তা, রুপা, হীরা অথবা জাংক গয়না বেশি মানানসই। মেকআপ যদি গাঢ় গোলাপির হয়, তাহলে বেছে নিন সোনার গয়না।
 লিপস্টিক ও ব্লাশঅন যদি গোলাপি হয়, তাহলে চোখটা স্মোকিভাবে সাজাতে পারেন।
 শুধুু কালো কাজল ব্যবহার না করে মভ, ধূসর, নীল, সবুজ রংগুলো ব্যবহার করতে পারেন।
 কাজল দেওয়ার আগে চোখের নিচে একটু পাউডার ছিটিয়ে নিন। এতে কাজল ছড়িয়ে পড়বে না। কাজল লাগিয়ে ব্রাশ দিয়ে হালকাভাবে পাউডার সরিয়ে নিতে হবে।
 গোলাপি রংটা যেহেতু আধুনিক, সে কারণে চুলের বাঁধনটাও পুরোনো ধাঁচে না করাই ভালো। খোঁপা কিংবা বেণি বাদ দিয়ে হাই বান, পনিটেল, উল্টিয়ে চুল আঁচড়ানোই বেশ লাগবে।

শুক্রবার, ১৬ মার্চ, ২০১২

হালকা সাজ টুকটুকে ঠোঁট

পান খেয়ে ঠোঁট লাল না করলেও হালফ্যাশনের সাজ হলো লাল রঙের লিপস্টিকে ঠোঁট রাঙিয়ে নেওয়া। অনেকে মনে করেন, শুধু জমকালো সাজের সঙ্গেই মানায় চড়া লাল লিপস্টিক। এ ধারণা ভুল। সাদামাটা সাজের সঙ্গেও ঠোঁট রাঙিয়ে নিতে পারেন লাল রঙে।

তবে লাল লিপস্টিক ব্যবহারের ক্ষেত্রে গায়ের রং কেমন, সেদিকে লক্ষ রাখতে হবে । গায়ের রং চাপা হলে লালের মাঝে গোলাপি কিংবা কমলার প্রাধান্য রয়েছে এমন লিপস্টিক ব্যবহার না করাই ভালো। সে ক্ষেত্রে কালচে লাল লিপস্টিক ব্যবহার করা উচিত। আবার গায়ের রং হলদেটে হলে লাল কমলা শেডের লিপস্টিক ব্যবহার করা উচিত নয়। ম্যাজেন্টা লাল লিপস্টিক ব্যবহার করাই ভালো। গায়ের রং উজ্জ্বল হলে লালের মাঝে যেকোনো শেড কিংবা টকটকে লাল লিপস্টিক ব্যবহার করলে ভালো দেখায়।
  লাল লিপস্টিক যেকোনো অনুষ্ঠানেই ব্যবহার করা যায়। তবে লক্ষ রাখতে হবে, অনুষ্ঠান কোন সময়ে হচ্ছে এবং ঠোঁটের সঙ্গে চোখের সাজ কেমন হচ্ছে। অনুষ্ঠান রাতে হলে লাল-সোনালি আভার লিপস্টিক ব্যবহার করা যায়। তবে এ ক্ষেত্রে চোখে গ্লিটারযুক্ত শ্যাডো ব্যবহার না করাই ভালো। চোখে কাজল আর হালকা মাশকারা দেওয়া যেতে পারে। যেহেতু লিপস্টিকের রং চড়া, তাই মুখে বেশি মেকআপ না দেওয়াই উচিত। হালকা বেজ মেকআপ দেওয়া যায়। কারণ, লাল লিপস্টিক যদি ছড়িয়ে যায় তবে দেখতে খুব বাজে লাগে। লিপলাইনার দিয়ে ঠোঁট এঁকে নিয়ে শুধু ঠোঁটের মাঝের অংশে লিপস্টিক দিন। এরপর ব্রাশ দিয়ে ছড়িয়ে দিন। ঠোঁট আরও আকর্ষণীয় করতে লাল রঙের লিপস্টিকের ওপর গ্লস ব্যবহার করা যায়। ঠোঁট পাতলা দেখাতে ম্যাট লিপস্টিক ব্যবহার করা যায়। আর পুরু দেখাতে লিপস্টিকের ওপর গ্লস ব্যবহার করা যায়।
  

  তবে লিপস্টিক ব্যবহার শেষে ঠোঁট থেকে তুলতে নরম কাপড় কিংবা তুলা ব্যবহার করতে হবে এবং ঠোঁট নরম রাখতে লিপবাম ব্যবহার করতে হবে।

বসন্ত ঋতুতে ত্বকের যত্ন

বসন্ত মানেই ঝরাপাতার অবসান আর নতুন পাতার আবির্ভাব। তবে শুষ্কতা আর রুক্ষতার কারণে এ সময় প্রকৃতিতে ধুলাবালি বেড়ে যায়। ধুলাবালির সঙ্গে সঙ্গে সূর্যের তির্যক আলোতেও ক্ষতিগ্রস্ত হয় ত্বক। তাই এই ঋতুতে ত্বকের দরকার বিশেষ যত্ন।
 
এ সময় সানবার্ন খুব বেশি হয়। কেবল মুখেই নয়, পিঠে এবং হাত-পায়েও হয়। তাই ব্যাগে সব সময় রাখতে হবে একটি ছাতা। বাইরে যাওয়ার আগে সানস্ক্রিন লোশন কিংবা জেল ব্যবহার করা উচিত। এ ছাড়া ব্যবহূত অন্য প্রসাধনী—লিপস্টিক ও পাউডারেও যেন এসপিএফ (সান প্রোটেক্টিভ ফিল্টার) ১৫-এর বেশি থাকে। রোদ থেকে চোখ রক্ষা করতে ব্যাগে রাখা যেতে পারে সানগ্লাস।

যাঁরা সানস্ক্রিন লোশন ব্যবহার করতে পারেন না, তাঁরা বারবার পানি দিয়ে মুখ ধুয়ে ফেলতে পারেন। সারা দিনের কাজ শেষে রাতে নিতে পারেন ত্বকের বাড়তি পরিচর্যা। এ জন্য মুখটা ক্লেনজার দিয়ে পরিষ্কার করতে হবে। এরপর কোমল সাবান দিয়ে মুখ ধুয়ে ত্বকের ধরন অনুযায়ী রাতে ব্যবহারের (নাইট ময়েশ্চারাইজিং) ক্রিম মাখতে হবে। ধুলাবালির কারণে ব্ল্যাক ও হোয়াইট হেডস জমে নাকে, ঠোঁটের নিচে। ব্ল্যাক ও হোয়াইট হেডসে জমা স্থানে গরম পানির ভাপ দিয়ে পাঁচ মিনিট পর প্লাকার দিয়ে নিজেই তুলে ফেলতে পারেন। ধুলাবালি থেকে চুল রক্ষা করতে পোশাকের সঙ্গে মিলিয়ে মাথায় একটা স্কার্ফ অথবা ব্যান্ডেনা বেঁধে রাখতে পারেন। নারকেল তেল ও জলপাইয়ের তেল একসঙ্গে গরম করে চুলে ম্যাসাজ করে শ্যাম্পু করলে চুল হয় ঝরঝরে। এ ছাড়া চুলের বাড়তি যত্নে টক দই, কলা, পেঁপে দিয়ে ঘরে তৈরি প্যাক ব্যবহার করলে চুল ভালো থাকে।
হাত-পায়ের যত্নে ঘরে বসেই নিজেই করে নিতে পারেন পেডিকিউর, ম্যানিকিউর। এ ছাড়া মাসে একবার পারলারে গিয়ে ফেসিয়াল করলে ত্বক ভালো থাকে।
দিনে অন্তত আট-নয় গ্লাস পানি এবং প্রচুর পরিমাণে ফল, সবজি আর সালাদ খাওয়া দরকার ।

রবিবার, ৪ মার্চ, ২০১২

ঘরে বসে মেকআপ

একটু পরই যেতে হবে পার্টিতে; পারলারে যাওয়ার সময়ও নেই আপনার হাতে। সাজতে হবে ঘরেই। কী করা? 


মেকআপের কিছু প্রাথমিক নিয়ম জানা থাকলে ঘরে বসেই মেকআপ করতে পারেন আপনিও। এ জন্য প্রয়োজনীয় উপকরণগুলো হলো প্যানস্টিক, ডাস্ট পাউডার, প্যানকেক, পাফ ও ফোম, ব্লাশন, কয়েক রকম আইশ্যাডো, মাশকারা, লিপস্টিক ও গ্লস, বিভিন্ন রকম চোখের, গালের ও ঠোঁটের ব্রাশ। প্যানকেক ও ডাস্ট পাউডার ত্বকের রং অনুযায়ী বাছাই করবেন। ফর্সারা গোলাপি, শ্যামলারা বাদামি আর কালোরা গাঢ় রং বেছে নেবেন।
মেকআপের আগে চাই ত্বকের যত্ন। ত্বক শুষ্ক হলে মুখ ধুয়ে হালকা করে তরল ময়েশ্চারাইজার লাগিয়ে নেবেন। ত্বক তৈলাক্ত বা মিশ্র হলে টোনার বা ফেসওয়াশ দিয়ে মুখ ধুলেই চলবে। অতিরিক্ত তৈলাক্ত হলে বরফ বেঁধে মুখে ঘষে নেবেন।
মেকআপের আগে প্রথমে আঙুলের ডগায় প্যানস্টিক নিয়ে মুখের কালো দাগ ঢেকে দিতে হবে। এরপর পাফের সাহায্যে পুরো মুখে ডাস্ট পাউডার লাগাতে হবে ও পানি স্প্রে করতে হবে হালকাভাবে। আঙুলের সাহায্যে চেপে পাউডার মুখে বসিয়ে নিতে হবে। পাউডার বসে গেলে ভেজা ফোমের সাহায্যে প্যানকেক লাগিয়ে নিন। প্রথমে টি জোন, অর্থাৎ কপাল, নাক ও চিবুকে লাগাতে হবে। তারপর আঙুলের সাহায্যে মুখের অন্যান্য অংশে পুরোপুরি মেশাতে হবে। হাতেও প্যানকেক লাগাতে হবে, যাতে ত্বকের রঙে বৈসাদৃশ্য দেখা না যায়। হালকা ফেসপাউডার বুলিয়ে গালের ভাঁজে ব্লাশনের পরশ দিন। তৈরি হয়ে গেল মেকআপের বেজ।
অনুষ্ঠানের সময় মাথায় রেখে চোখের সাজ করা ভালো বলেই মনে করেন আফরোজা কামাল। তিনি বলেন, দিনে হালকা সাজই মানানসই। পোশাকের সঙ্গে মিলিয়ে চোখে ন্যাচারাল টোনের শেড, যেমন—সোনালি, গোলাপি, বা বাদামি শেড ভালো লাগবে। কাজল ব্যবহার করতে পারেন, সঙ্গে ভারী মাশকারা থাকবে। রাতের অনুষ্ঠান হলে গাঢ় শেড ব্যবহার করবেন। ব্লাশনও গাঢ় হবে।
ঠোঁট লাইনার দিয়ে এঁকে নেওয়া ভালো। দিনের বেলা হালকা, যেমন—বাদামি, বিজ, গোলাপি ইত্যাদি রঙের লিপস্টিক বা শুধু গ্লস ব্যবহার করতে পারেন। রাতের অনুষ্ঠানে গাঢ় লিপস্টিক কিংবা গাঢ় শেডের গ্লস ভালো মানাবে। আফরোজা কামাল আরও যোগ করলেন, মেকআপের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ অংশ হলো, সঠিক নিয়মে মেকআপ তোলা। তাহলেই ত্বকে মেকআপের কোনো খারাপ প্রভাব পড়বে না।
তাহলে আর দেরি কেন? ঘরে বসেই হয়ে যাক পারলারের সাজ।